Poor Road Condition: রোডের নাম ‘কাটমানি’, দেখতে নাকি এমন হয়!
Goghat: গোঘাটের ভাদুর গ্রামপঞ্চায়েতের ভাদুর ভীমতলা থেকে বালিকাকুণ্ড পর্যন্ত ৪.২৬ কিলোমিটার নতুন পিচ রাস্তা হচ্ছে। দিন তিনেক কাজ হতে না হতেই রাস্তার পিচ উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাথর মেশানো পিচের রাস্তা। তারও এমন দশা।
হুগলি: রাস্তায় পিচ ঢালা হয়েছে ঠিকই। তবে পিচ হাত দিলেই উঠে চলে আসছে বলে অভিযোগ। এদিকে প্রতিবাদ করলে শাসকদলের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। গোঘাটের ভাদুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় এ নিয়ে জোর তরজা। বিরোধীদের বক্তব্য, এ রাস্তা পিচের নয়, কাটমানির, ‘কাটমানি রোড’। তাই এমন জীর্ণ দশা। হুমকির অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল।
গোঘাটের ভাদুর গ্রামপঞ্চায়েতের ভাদুর ভীমতলা থেকে বালিকাকুণ্ড পর্যন্ত ৪.২৬ কিলোমিটার নতুন পিচ রাস্তা হচ্ছে। দিন তিনেক কাজ হতে না হতেই রাস্তার পিচ উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাথর মেশানো পিচের রাস্তা। তারও এমন দশা। রাস্তাটি তৈরির দায়িত্বে হুগলি জেলা পরিষদ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কাজ একদমই ঠিকঠাক হয়নি। তাই নতুন রাস্ত। পিচ ঢালতে না ঢালতেই উঠে গিয়েছে।
যদিও ঠিকাদার সংস্থার ম্যানেজার বলছেন পিচ জমতে সময় লাগবে। তবে গ্রামবাসীরা বলছেন গরমকালে পিচ জমতে সময় লাগে। কিন্তু এই কনকনে ঠান্ডায় কীভাবে সময় লাগছে এত? অভিযোগ, গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম পাত্র তাঁর দলবল নিয়ে এলাকায় হুমকি দিচ্ছেন। তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিজয় রায় অবশ্য এই হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এলাকার বাসিন্দা অয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেকদিন পর রাস্তা হচ্ছে গ্রামে। আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ২-৩ দিন কাজ করার পর দেখছি রাস্তায় হাত দিলেই পিচ উঠে আসছে। ২০০-৩০০ মিটারের কাজ হয়েছে। তার এই অবস্থা। পিচ বসতে এত সময় লাগে নাকি? আমরা কিন্তু ঠিকাদারকে বলি, পিচ ঢালার আগে যেসব জিনিস সেগুলি এত কম কেন দিচ্ছেন? তখন ঠিকাদার বলে ৫ বছরের গ্যারান্টি আছে। কিছুই হবে না। তিনদিনেই রাস্তার এ হাল পাঁচ বছর আর কী টিকবে।”
ঠিকাদারের ম্যানেজার অরবিন্দ পাল বলেন, “পিচটা ৩ দিন আগে দেওয়া হয়েছে। একটু তো জমতে সময় দিতে হবে। সপ্তাহখানেক সময় তো লাগবেই। আর কেউ যদি কিছু দিয়ে খুঁড়ে দেয় তাহলে তো হবেই। গাড়ি চলছে। একটু সময় তো দিতেই হবে। আজ বসছে কাল উঠে আসছে বললে হয়। নিয়ম মেনেই কাজ হয়েছে।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম পাত্র বলেন, “রাস্তা সম্পর্কে তো আমাদের কারও অভিজ্ঞতা নেই। আলোচনার মধ্যে দিয়ে সবটা মিটমাট করতে হবে। হঠকারিতা করতে গেলে দেখা যায় ঠিকাদাররা চলে গিয়েছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।” অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন “সব জায়গায় এই কাজই হচ্ছে। জেলা পরিষদ রাস্তাগুলি করাচ্ছে। শাসকদল ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাটমানি খাচ্ছে। আর এই নিম্নমানের রাস্তা হচ্ছে। মানুষ প্রতিবাদ করলে আবার তৃণমূলের লোকেরা ধমকাচ্ছে।”
তবে তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিজয় রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, “শীতের সময় গ্রাম বাংলায় পিচের কাজ করার যোগ্য পরিবেশ নেই। জেলা পরিষদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ঠিকাদারের সঙ্গেও কথা বলে নতুন করে কাজটা করা যায় কি না দেখছি। আবহাওয়ার কারণেই সমস্যা এটা বলতে পারি। বিরোধীরা অনেক কিছুই বলবে। বিজেপির বিধায়ক এলাকায়। কিন্তু বিশ্বনাথ কারক কোনও কাজই করেননি। বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা করছে।”