
চুঁচুড়া: ২৬ হাজার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর তিনিও একজন। চাকরি হারানোর পর আন্দোলনে নেমেছেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বিভিন্ন আন্দোলনে সামনের সারিতে দেখা যায় তাঁকে। সেই চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাসের এবার বেতন কাটা গেল। একমাসের বেতন থেকে ১৫ হাজার ৪৬৬ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, এভাবে তাঁকে আন্দোলন থেকে সরানো যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। তবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন। তবে আবার পরীক্ষা দিতে হবে চাকরি পেতে। সেই তালিকায় রয়েছেন চুঁচুড়ার কোদালিয়ার চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাস। শুক্রবার বেতন ঢুকতেই তিনি দেখেন, বেতন থেকে পনেরো হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
আন্দোলনকারী চাকরিহারা ওই শিক্ষক বলেন, “আজকে আমার বেতন ঢোকার পর দেখি, ১৫ হাজার ৪৬৬ টাকা কম এসেছে। বেতন কেটে নেওয়ার মূল কারণ, আমরা দীর্ঘদিন ধরে যোগ্য চাকরি ফেরানোর লড়াই লড়ছি। তাই বিদ্যালয়ে যেতে পারছি না। আমাদের যোগ্য চাকরি যদি রাজ্য সরকারের ও এসএসসির দুর্নীতির কারণে না যেত, তাহলে এই আন্দোলন করার প্রয়োজন ছিল না।”
বেতন কাটলেও তিনি যে আন্দোলন থেকে সরে আসছেন না, সেকথা স্পষ্ট করে দিয়ে সুমন বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য সরকার, পুলিশমন্ত্রী তথা আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের যোগ্যদের আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার জন্য আমাকে ১৮ অগস্ট আটক করেছিলেন। ভয় দেখাচ্ছেন। আন্দোলন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার এখন চেষ্টা হচ্ছে যাতে আমরা সপরিবারে না খেতে পেয়ে মরে যাই। তবে আমি বলতে চাই, আমার বেতন সব কেটে নিলেও এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আনটেনটেড শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীদের যোগ্য চাকরি না ফেরানো পর্যন্ত আমি এই আন্দোলন থেকে পিছপা হব না।”
আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় কেন তাঁরা বসবেন, সেই প্রশ্নও তোলেন চাকরিহারা এই শিক্ষক। যোগ্যদের চাকরি বাঁচানোর জন্য বিধানসভার জরুরি অধিবেশন ডেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপেরও আবেদন জানান তিনি।