AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Santanu Banerjee: মাধ্যমিকে ফেল শান্তনু, বাবার করে দেওয়া মোবাইলের দোকান থেকে কীভাবে হয়ে উঠলেন কোটিপতি

Santanu Banerjee: মাধ্যমিকে ব্যাক পেয়েছিলেন। পরের বছর আবারও মাধ্যমিক দেন। বাবা ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। কিন্তু ছেলের পড়াশোনার অবস্থা দেখে একটা দোকান কিনে দিয়েছিলেন ছেলেকে।

Santanu Banerjee: মাধ্যমিকে ফেল শান্তনু, বাবার করে দেওয়া মোবাইলের দোকান থেকে কীভাবে হয়ে উঠলেন কোটিপতি
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 19, 2023 | 4:57 PM

বলাগড়: মাধ্যমিক ‘ব্যাক’ পাওয়া ছেলেটা ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিল বলাগড়ের বেতাজ বাদশা। পড়াশোনায় কোনও কালেই মুখ উজ্জ্বল করেননি পরিবারে। কিন্তু দুর্নীতির সিঁড়ি বেয়ে উঠে দু’হাত টাকা কামিয়েছেন। বানিয়েছেন কুবেরের ধন। আর শাসকদলের তাবড় নেতা হয়ে ওঠার পর তো আর কথাই নেই। নেই শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়েরই সম্পর্কে যখন টিভিতে-সংবাদমাধ্যমে এত খবর দেখছেন, খুব একটা বেশি বিস্মিত হচ্ছেন না তাঁর ছেলেবেলার বন্ধুরাও। বলাগড়ে তো এমনিতেই লোকের মুখে মুখে ফিরছে, ‘পাপ বাপকেও ছাড়ে না।’ বলাগড়ে গিয়ে দেখা মিলল শান্তনুর একটা স্কুলজীবনের বন্ধুর সঙ্গে। একেবারেই ছাপোষা এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, শান্তনুর ছেলেবেলার কথা। শান্তনু বলাগড় হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন। মাধ্যমিকে ব্যাক পেয়েছিলেন। পরের বছর আবারও মাধ্যমিক দেন। বাবা ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। কিন্তু ছেলের পড়াশোনার অবস্থা দেখে একটা দোকান কিনে দিয়েছিলেন ছেলেকে। ভেবেছিলেন ব্যবসাপাতি করেই রুজিরুটির ব্যবস্থা করবে ছেলে। ব্যবসা করলেন বটে ছেলে, তবে তা জোচ্চুরির ব্যবসাই বটে!

শান্তনুর বন্ধুই জানান, মোবাইলের দোকানে কাজ করতে করতেই একটি গাড়ি কেনেন তিনি। তারপরে বাবার মৃত্যুর হয়। বাবা কর্মরত অবস্থায় মারা যাওয়ায়, তাঁর চাকরিটা পেয়ে যান শান্তনু। ২০১১ সাল থেকে একটু একটু করে উত্থান।

যে এলাকায় শান্তনুর দোকান ছিল, তার কাছেই ছিল প্রিয়াঙ্কার বাড়ি। সেখান থেকেই দু’জনের পরিচয়। তারপর ভালবেসে বিয়ে। বলাগড়ের বাসিন্দারাই জানাচ্ছেন, সহধর্মিনী ধীরে ধীরে সহকর্মীও হয়ে ওঠেন। হুগলির চন্দননগরে প্রোমোটারিতে যে বিনিয়োগ করেছিলেন শান্তনু, তা স্ত্রীর নামেই। শান্তনুর গ্রেফতারির পরেই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার নাম। ইডি-র তল্লাশিতে শান্তনুর একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। যদিও প্রিয়াঙ্কার দাবি, তিনি তাঁর স্বামীর সম্পত্তির পরিমাণ সম্পর্কে একেবারেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না।

শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলাগড়ের গেস্টহাউসের তালা ভেঙে শনিবারই তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। এরইমধ্যে উঠেছে আরও বড় অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ইডি তল্লাশি সেরে চলে যাওয়ার পরে ওই গেস্ট হাউসে রাতে পার্টি হয়। পার্টি শেষ হওয়ার পরে গেস্ট হাউসে লাগানো হয় নতুন তালা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শান্তনু আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিয়ে নির্বাচন করাতেন। শান্তনুর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগকারীকে গুলি করে গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। বলাগড় পঞ্চায়েত এলাকায় শান্তনুর এত সম্পত্তি হল কী করে? পঞ্চায়েতের তরফে কী প্রতিক্রিয়া? বলাগড় পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা মুখোপাধ্যায় বাড়িতে গেলেও মেলেনি না কোনও সাড়া শব্দ। তারপর একই প্রশ্ন নিয়ে উপপ্রধান পপি মুস্তাফির বাড়িতে যাওয়া হয়। অনেক ডাকাডাকিতেও উত্তর দেননি তিনি।

সূত্রের খবর, নামে-বেনামে একাধিক বাড়ি, ধাবা, রেস্তোরাঁ, হোম স্টে, বাগানবাড়ি, ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে, যেগুলির সঙ্গে যোগ রয়েছে শান্তনু এবং প্রিয়াঙ্কার। মাধ্যমিকে ‘ব্যাক’ পেয়েও এই বিশাল সাম্রাজ্যের ‘মালিক’ শান্তনুর পিঠপিছে এখন বিদ্রুপের হাসি হাসছে বলাগড়।