
হুগলি: এসআইআর ‘আতঙ্কে’ ফের মৃত্যু! আগরপাড়া, ইলামবাজার ও পূর্ব বর্ধমানের পর ডানকুনির একটি ঘটনাকেও একই সুতোয় বাঁধল তৃণমূল। অবশ্য, এই সব অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। শাসকদল ‘চক্রান্ত’ করছে বলেই অভিযোগ তাঁদের। মৃতের নাম হাসিনা বেগম। মৃত্যুর আগে বয়স ছিল ৬০ বছর। তিনি হুগলি জেলার ডানকুনি পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু বয়স হওয়ার কারণে থাকতেন মেয়ের কাছেই। ওই বৃদ্ধার মেয়ে ডানকুনি পুরসভার ২০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন বা এসআইআর নিয়ে আতঙ্কিত ছিলেন তিনি। দিন তিনেক আগেও এলাকায় এসআইআর সংক্রান্ত সচেতনতা নিয়ে একটা বৈঠক হয়। তাতেও উপস্থিত ছিলেন ওই বৃদ্ধা। এমনকি, বৈঠকের পরেও উদ্বেগ কাটেনি তাঁর। আরও চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘চা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু মাঝরাস্তায় হঠাৎ করেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন তিনি। সবাই ধরে-বেঁধে বাড়ি নিয়ে যায়। কিন্তু উনি আর চোখ খুলছিলেন না। এরপর তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
রবিবার মৃত্যু, সোমবার সকালে নিহতের বাড়িতে পৌঁছে যান ডানকুনি পুরসভার চেয়ারম্যান হাসিনা শবনম। বৃদ্ধার মৃত্যুর জন্য এসআইআর-কেই দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘ওই বৃদ্ধার নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই। তাই মনের মধ্য়ে স্বাভাবিকভাবেই একটা আতঙ্ক তৈরি হয়। আমরা প্রতি মুহুর্তে চেষ্টা চালাচ্ছি মানুষের মন থেকে ভয় দূর করার। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না, এসআইআর-এর জন্য আর কতজনকে প্রাণ দিতে হবে।’ ওই বৃদ্ধার একজন প্রতিবেশীও খুব অসুস্থ। হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাঁর। হাসিনার কথায়, সেটাও এই এসআইআর নিয়ে চিন্তার কারণেই। একই সুর তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণালের। তিনি বলেন, ‘খবরটা শুনলাম। অভিযোগ উঠেছে, এসআইআর জনিত চাপ সহ্য় করতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এখানে ছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় তাঁর নাম নেই। এই কারণেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। চাপ জনিত অসুস্থ। এরপর হার্ট অ্যাটাক। অবশেষে মৃত্যু।’
তবে পৌরসভা চেয়ারম্যানের এসব অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। SIR নিয়ে ‘আতঙ্ক তৈরির’ কোনও কারণ নেই বলেই দাবি বিজেপি নেতা দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘২০০২ সালের এসআইআর-কে সমর্থন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আজ কী অবস্থা! তখন খসড়া তালিকায় ৬৯ হাজার নাম বাদ গিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম সরকারের দিকে দায় ঠেলেছিলেন।’