হুগলি: চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন হুগলি শ্রীরামপুর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমা নাথ। সেই ঘটনার এক বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে, তৃণমূল কাউন্সিলরের (TMC Councilor) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরই আপ্তসহায়ককে গ্রেফতার করল পুলিশ। উত্তর প্রদেষ থেকে বিজয় সাউকে গ্রেফতার করে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসে শেওড়াফুলি জিআরপি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীরমপুর স্টেশনে তৃণমূল কাউন্সিলর আত্মহত্যা করার পরেই গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বিজয়। প্রথমে সরাসরি দিল্লিতে পালিয়ে যান তিনি। সেখান থেকে উত্তর প্রদেশে বাঘপাতে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিজয়ের। সেই সঙ্গীর গ্রাম লোহারিতে গিয়ে দিনমজুরের কাজ নেন বিজয়। ফোনের নেটওয়ার্ক দেখে খুঁজে অবশেষে তদন্তকারীরা সেখানে গিয়ে বিজয়কে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারির পর, বাঘপাত আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে বিজয়কে রাজধানী এক্সপ্রেসে রবিবার হাওড়া নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় শেওড়াফুলি। জানা গিয়েছে, ধৃতকে আজ শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হবে।
গত বছর, ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীরামপুর স্টেশনে গিয়ে বসেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর রমা নাথ। নিত্যযাত্রীরা সকলেই ভেবেছিলেন, হয়ত তিনিও ট্রেনেই উঠবেন। কিন্তু, ট্রেন আসতেই চলন্ত গাড়ির সামনেই ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন রমাদেবী। কেউ কিছু বোঝার আগেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় গোটা দেহটা। খবর পেয়ে স্টেশনে আসেন এলাকার তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। জিআরপি এসে দেহ উদ্ধার করে।
প্রায় দশ বছরের কাউন্সিলর রমাদেবী কেন আত্মঘাতী হলেন, সেই কারণ নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অবিবাহিত রমাদেবী নিজের বৃদ্ধা মাকে নিয়ে শ্রীরামপুরের মানিকতলা এলাকায় থাকতেন। তাহলে কেন তিনি আত্মহত্যা করলেন? রমাদেবীর মৃত্যুর পরেই কানাঘুষো শুরু হয়, তাঁর মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছেন আপ্ত সহায়ক বিজয় সাউ। বিজয় ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্যও ছিলেন।
অভিযোগ, কাউন্সিলরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বিজয়ের। আর এই ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে প্রচুর পরিমাণ টাকার নয়ছয় করেছিলেন বিজয়। পরে সেইসব সামনে আসতেই রমাদেবীর সঙ্গে বিরোধের সূত্রপাত। এমনকী, রমাদেবীকে শোষণ করে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেন বিজয়ই, অভিযোগ এমনটাই। মৃতা কাউন্সিলরের পরিবারও অভিযোগ করে জানায়, নানাভাবে বিজয় রমাদেবীকে শোষণ করছিলেন। আত্মহত্যা করার কিছুদিন আগে সেকথা রমা নিজেই বলেছিলেন। তবে তিনি যে আত্মহত্যা করতে পারেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি মৃতার পরিবার। রমাদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়েই গা-ঢাকা দেন বিজয়। অবশেষে, এক বছর পর গ্রেফতার করা হল বিজয়কে।
আরও পড়ুন: Siliguri Munucipal Election: ‘আমরা কখনও জিতিনি…জয় পেতে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে’