Manoranjan Bapari: ‘উনি যে বিজেপির বাড়িতে খান, বিজেপির ছেলের সঙ্গে ঘোরেন!’, মনোরঞ্জনের অভিযোগে পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের

TMC: "উনি বিধায়ক হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিতে কে দলে আসবে আর কে যাবে, কাকে বিজেপি দাগাতে হবে সেটা উনি কি পয়সা নিয়ে ঠিক করে দেবেন? দল কি ওনাকে তেমন কোনও নির্দেশ দিয়েছেন?''

Manoranjan Bapari: 'উনি যে বিজেপির বাড়িতে খান, বিজেপির ছেলের সঙ্গে ঘোরেন!', মনোরঞ্জনের অভিযোগে পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের
মনোরঞ্জন ব্যাপারী। (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 25, 2021 | 9:25 AM

হুগলি: ফের বিস্ফোরণ ঘিটিয়েছেন বলাগড়ের (Balagarh) তৃণমূলের বিধায়ক (TMC MLA) মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Bapari)। বিজেপি থেকে ‘গণহারে’ তৃণমূলে লোক ঢোকানোর অভিযোগ করে ফেসবুক পোস্টে বোমা ফাটান তিনি। তাঁর অভিযোগ, দলবদলু নেতাদের তৃণমূলে জায়গা দিতে হলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে বিধি বাতলে দিচ্ছেন, তা মানছেন না তাঁর কেন্দ্রের এক নেতা।

আর বিধায়কের এই মন্তব্যে বেশ চটেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘কাকে বিজেপি দাগাতে হবে সেটা উনি কি পয়সা নিয়ে ঠিক করে দেবেন?’ বলাগড়ের বর্তমান বিধায়ককে কটাক্ষ করে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। সব মিলিয়ে জোর শোরগোল তৃণমূলের অন্দরে।

মনোরঞ্জন ব্যাপারীর একাধিক ফেসবুক পোস্ট ঘিরে আগেই অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। বুধবার তাঁর দলবদলুদের নিয়ে করা দীর্ঘ পোস্টের প্রেক্ষিতে বলাগড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অসীম মাজির প্রতিক্রিয়া, “উনি বিধায়ক হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিতে কে দলে আসবে আর কে যাবে, কাকে বিজেপি দাগাতে হবে সেটা উনি কি পয়সা নিয়ে ঠিক করে দেবেন? দল কি ওনাকে তেমন কোনও নির্দেশ দিয়েছেন?”

এখানে না থেমে অসীমবাবু যোগ করেছেন, “উনি (মনোরঞ্জন ব্য়াপারী) বিজেপির বাড়িতে গিয়ে খাচ্ছেন, বিজেপির ছেলে নিয়ে ঘুরছেন। অজয় দে বংশী কে? অজয় দে বংশী হল সিজা কামালপুরের প্রাক্তন সিপিএম প্রধান। সিপিএম ছেড়ে সে বিজেপিতে গিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। পাঁচ মাস আগের পরিচয়টা জানুন। আর তাকে নিয়েই ঘুরছেন। এসব করে এর আগেও দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বিধায়ক।”

এদিকে ফেসবুক পোস্টে মনোরঞ্জন ব্যাপারী দাবি করেন, দলের কোনও নির্দেশ নেই যে বিজেপি থেকে গণহারে নেতাদের তৃণমূলে ঠাঁই দেওয়া হবে। তা সত্ত্বেও কেউ কেউ এটা করছেন। এবং এর দায় তিনি নেবেন না। তিনি এও জানান, “যারা তৃণমূল ছেড়ে ভোটের আগে আগে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, দলে নেওয়ার মত নির্দেশ আমাদের কাছে নেই। তারা যদি আবেদন করেন দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে পৌছে দিতে হবে। লোকাল কারও কাছে এই ক্ষমতা নেই। তিনি আরো জানান, “বলাগড়ের যারা কর্মী যাঁরা জান প্রাণ দিয়ে খেটেছেন, দলটা কে জিতিয়েছেন, দিদির অনুগামী, তারা যাতে ভীত না হোন,যে দলে অনুপ্রবেশ করে গেলে তারা কোণঠাসা হয়ে যাবেন। জনগণের কাছে গিয়ে বলা সম্ভব নয়। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা, তাঁরা যাতে ভীত না হোন। সেই উদ্দেশ্যেই এই মন্তব্য।”

এদিকে এ নিয়ে হুগলি শ্রীরামপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, “গত বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আবার পশ্চিমবঙ্গে ফেরার পর বিজেপি ও অন্য দল থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসে আসার জন্য পা বাড়িয়ে আছেন বহু নেতানেত্রী, কর্মী, এমএলএ, এমপিরা। এবং তাঁরা দলে যোগদান করার জন্য আবেদন করছেন। আমাদের দলে এই মুহূর্তে গাইডলাইন রয়েছে, যে যারা অন্য দল থেকে আসতে চায়, তাঁদের আবেদন করতে হবে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কাছে। এবং সেখান থেকে অনুমোদন সাপেক্ষেই কাউকে নেওয়া যাবে। এটা ইচ্ছা মত নিচু লেভেলে কেউ কাউকে দলে যোগদান করাতে পারে না।”

প্রসঙ্গত, বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় কয়েকজন বিজেপি নেতা তৃণমূলে যোগ দেন। এবং তা বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী জানতেন না বলে খবর। মনোরঞ্জন ব্যাপারী বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর অনেক পোস্টেই পাওয়া যায় বলাগড়ে তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ। যা নিয়ে দলের নেতারা বিরক্ত। যদিও প্রকাশ্যে আর কেউ কিছু বলতে চাইছেন না।

আরও পড়ুন: Attempt to Suicide: মদ-কে অপমান! অভিমানে হাইটেনশন খুঁটিতে উঠে জীবন শেষ করে দিতে চাইলেন গোপাল