হুগলি: ফের বিস্ফোরক বলাগড়ের (Balagarh) তৃণমূলের বিধায়ক (TMC MLA) মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Bapari)। এবার বিজেপি থেকে ‘গণহারে’ তৃণমূলে লোক ঢোকানোর অভিযোগ করে ফেসবুক পোস্টে বোমা ফাটালেন তিনি। তাঁর দাবি, দলবদলু নেতাদের তৃণমূলে জায়গা দিতে হলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে বিধি বাতলে দিচ্ছেন, তা মানছেন না তাঁর কেন্দ্রের এক নেতা। তবে তাঁর নাম তিনি জানাননি। ঠিক কী লিখেছেন মনোরঞ্জন?
বুধবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মনোরঞ্জন এক পোস্টে লিখেছেন, “আমি বলাগড় বিধান সভার দিদির আশীর্বাদ ধন্য জনগনের ভোটে নির্বাচিত বিধায়ক। আমার প্রতি দলের নির্দেশ আছে, যারা ভোটের আগে তৃনমূল দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল তাদের কোন অবস্থায় এই মুহূর্তে তৃণমূল দলে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।” (বানান ও শব্দগঠন অপরিবর্তিত)।
এর পর তিনি আরও লেখেন, “যারা আগে থেকে বিজেপি দলে ছিল তারা তৃনমূল দলে আসতে চাইলে লিখিত ভাবে দলের কাছে আবেদন করতে হবে। সেই কাগজ উচ্চতম নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে হবে। এরপর যা সিদ্ধান্ত নেবার তারাই নেবেন।” (বানান ও শব্দগঠন অপরিবর্তিত)। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের।
তিনি যোগ করেন, “এই যে বলাগড়ে এক দল কথিত নেতা গনহারে বিজেপি থেকে লোককে তৃনমূলে ঢোকাচ্ছে আমি সে বিষয়ে অবগত নই। আমাকে কেউ কিছু জানাবার প্রয়োজন মনে করছে না। এমনটা করা যায় কিনা তাও আমার অজানা।” (বানান ও বাক্যগঠন অপরিবর্তিত)। তাই দলবদলের এই দায় তিনি নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বলাগড়ের বিধায়ক।
এর আগে একাধিক বিষয়ে দলের সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন ‘লেখোয়াড়’ থেকে প্রথমবার রাজনীতির ময়দানে আসা মনোরঞ্জন। ফেসবুকেও তাঁর একাধিক পোস্ট ঘিরে অসন্তুষ্ট দলের একাংশও। এমনকি খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সাবধান করেছেন। তবে তিনি অবশ্য ফেসবুকেই লিখেছিলেন, “আমার কথা, কাজ, জীবন যাপন অনেকের ঠিক পছন্দ নয়। সে না হোক তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার আদর্শ দিদি মমতা ব্যানার্জি।”
এদিকে তাঁর এদিনের ফেসবুক পোস্টের প্রেক্ষিতে মনোরঞ্জন বাবুর সঙ্গে যোগাযোকগ করা হলে তিনি জানান, যা বলার ফেসবুকেই বলেছেন, এ নিয়ে আর বাক্যব্যয় করতে চান না। কোন নেতার দিকে তিনি আঙুল তুলেছেন তাঁর নামও করতে চাননি মনোরঞ্জন।
এ নিয়ে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার পরোক্ষে মনোরঞ্জনকে সমর্থন করেছেন। তাঁর দাবি, বিজেপি ক্ষমতায় আসবে ভেবে অনেকে ভোটের আগে ভিড় করেছিলেন। তার পর এখন তাঁরা দল ছাড়ছেন। এ নিয়ে আবার নাম করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে মনোরঞ্জনবাবু ছাড়াও হুগলির আরেক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও দলবদলু নেতাদের ফের ঘাসফুলে ঠাঁই দেওয়া নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছেন। কিছুদিন আগে তো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরওয়াপসির পর প্যারোডি করে গানও শোনাতে দেখা গিয়েছে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদকে। এবার হুগলির এক বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীও বিজেপি থেকে আসা নেতাদের তৃণমূলে জায়গা দেওয়া নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটালেন।
আরও পড়ুন: TMC: ছিল প্রাথমিক স্কুলের জায়গা, হয়ে গেল তৃণমূলের কার্যালয়!