Kalyan Banerjee: ‘গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা…’ এবার রাজীবকে ব্যঙ্গ ‘গায়ক’ কল্যাণের
Kalyan Banerjee and Rajib Banerjee: অভিমানও ঝরে পড়ে কল্যাণের গলায়। বলেন, "দেখব আবার কেউ ফিরে এসে তৃণমূলের কাছে আমার চেয়েও কাছের হয়ে গিয়েছে।”
হুগলি: “গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা… এপার ওপার কোনপার জানি না… বুঝতে পেরেছেন… মানে কখন তৃণমূলে, কখন বিজেপি বুঝতে পারছি না…” যেন খানিকটা নচিকেতার স্টাইলে ‘আমি মুখ্য সুখ্যু মানুষ বাবু কিছুই বুঝি না’ গানের আদলে ভূপেন হাজারিকার গান গাইলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। আর সেই গান গাইতে গাইতে ফের তাঁর নিশানায় তৃণমূলে ঘরওয়াপসি করা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। মঙ্গলবার একটি কালী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে মঞ্চ থেকে এভাবেই গান গেয়ে রাজীবকে তীব্র কটাক্ষ করলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ।
সাংসদ গাইতে থাকেন, “আমি সব পারেতেই আছি গাঙের জলে ভাসিয়ে দিয়ে ডিঙা… আমি দুই নদীতেই নাচি…মানে তৃণমূলে নাচছে, বিজেপিতেও নাচছে।… একবার চলে যাব মা বলে, একবার চলে যাব মোদীর কাছে।… এপার ওপার কোন পারে জানিনা দুই পারেতেই আছি। ও আমি মাঝ দরিয়ায় ভাসি, দৌড়ে চলে যাব মা বলে আবার চলে যাব মোদীর কাছে। দুই চোখে দুই জলের ধারা মেঘনা-যমুনা। মমতাদি এক কোণে মোদীজি আরেক কোণে।” এভাবেই গাইতে গাইতে নাম না করে সদ্য বিজেপি ছেড়ে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ। মঞ্চে ‘গায়ক’ সাংসদের এমন পারফরমেন্সে হাততালিও জুটল প্রচুর।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বলেন, “রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আরও অনেকে আছে। দেখতে থাকুন… তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা ফিরে আসবেন।” তার পর আবার শুভেন্দুকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। বলেন, “শুভেন্দু রাগ করিস না ভাই।অনেক কথা বলে ফেলেছি। কখন কোনওদিন তুইও চলে আসবি, তার তো কোন ঠিক নেই। যাদের যাদের সম্বন্ধে সমালোচনা করেছিলাম, তাদের সবাইকে বলছি কেউ রাগ করিস না। তখন তোরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলি তাই বলে ছিলাম। আবার কবে কোন দিন চলে এসে আমার চেয়ে কাছের বেশি তৃণমূলের হয়ে যাবি তোরা।”
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন একুশের ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া রাজীব। তাঁর প্রত্যাবর্তনে অভিমানের সুর তখনই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। সেবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘কেউ কথা রাখেনি।’ করলেন তৃণমূল সাংসদ।
বলেছিলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমায় মেনে নিতে হবে। একদা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দলের কোনও সাধারণ কর্মীকে দুঃখ দিয়ে কোনও বিশ্বাসঘাতককে দলে ফেরানো হবে না। সেখানে, আজ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ‘টপ টু বটম’ কোরাপ্ট নেতাকে দলে যোগদান করানো হল। নির্বাচনের সময় ডোমজুরে সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন রাজীবের কলকাতায় তিনটে বাড়ি আছে। ওর টাকা দুবাই এ খাটানো হয়। তারপরেও কেন এমন নেতাকে দলে ফেরানো হল, জানা নেই।” আর এ দিন কার্যত অভিমানও ঝরে পড়ে কল্যাণের গলায়। বলেন, “দেখব আবার কেউ ফিরে এসে তৃণমূলের কাছে আমার চেয়েও কাছের হয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: Tathagata Roy: ‘লালা ঝরছিল,’ উপনির্বাচনের ফলের পর দিলীপ-কৈলাসকে কুরুচিকর আক্রমণ তথাগতর