‘এটাও পাওনা ছিল!’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও মহিলা কর্মাধ্যক্ষের চুলির মুঠি ধরে অফিসছাড়া করল দলেরই কর্মীরা!

TMC: তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও আধিকারিক। তাঁদেরই অফিসে ঢুকে ব্যাপক হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সভাপতিকে অফিসের চেয়ার থেকে নামিয়ে টানতে টানতে বের করে দেওয়া হয়। তাঁকে রক্ষা করতে এসে প্রহৃত হলেন দুই মহিলা কর্মাধ্যক্ষ।

'এটাও পাওনা ছিল!' পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও মহিলা কর্মাধ্যক্ষের চুলির মুঠি ধরে অফিসছাড়া করল দলেরই কর্মীরা!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 09, 2021 | 5:49 PM

আরামবাগ: তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও আধিকারিক। তাঁদেরই অফিসে ঢুকে ব্যাপক হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সভাপতিকে অফিসের চেয়ার থেকে নামিয়ে টানতে টানতে বের করে দেওয়া হয়। তাঁকে রক্ষা করতে এসে প্রহৃত হলেন দুই মহিলা কর্মাধ্যক্ষ। চুলের মুঠি ধরে তাঁদের অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোমবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজদনা ছড়াল গোঘাটে।

আক্রান্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পালের অভিযোগ, দলের এক শ্রেণির কর্মী, সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদারের ইন্ধনে তাঁদের ওপর এই আক্রমণ হয়েছে। তাঁর কথায়, “কী কারণে এই ভাবে আমাদের ওপরে আক্রমণ করল তা আমার জানা নেই। শুধুমাত্র ক্ষমতার লড়াইকে কেন্দ্র করে ওরা আমাদের ওপরে এই আক্রমণ করল।”

এদিন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরে ঢুকে পড়েন তৃণমূল নেতারা। তাঁকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে এক মহিলা কর্মাধ্যক্ষের চুলের মুঠি ধরে মারধর করে বের করে দেওয়া হয় অফিস থেকে। ঘটনার জেরে বিডিও অফিস চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষরা গোঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গোঘাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নাম মনোরঞ্জন পাল। আক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষের নাম শ্যামলি ঘোষ ও ময়না বাগ। শ্যামলী ঘোষ বনভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ এবং ময়না বাগ স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কার্যত কেঁদে ফেলেন শ্যামলী ঘোষ। বলেন, “আমাকে যে ভাবে অপমানিত করা হয়েছে তা বলার আমার ভাষা নেই। এখানকার প্রাক্তন বিধায়ক, ব্লক সভাপতি নারায়ণ পাঁজার ইন্ধনে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্রীমন্ত রায়ের দলবল জনা পঞ্চাশেক লোক আমাদের মারল। আমাকে তীব্র হেনস্থা করল। আমি একজন মহিলা। অথচ ছেলেদের দিয়ে আমাকে আক্রমণ করাল ওরা!”

এদিনের ঘটনায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। শ্যামলী দেবীর কথায়, “সহ-সভাপতি শুভেন্দুর হাত ধরে ভোটের আগে বিজেপিতে গেল। আর এখন উনি তৃণমূলের বড় নেতা হয়ে গিয়েছেন! আমি ১৯৯৮ সাল থেকে পার্টি করছি। বহু মার খেয়েছি। ঘরছাড়া হয়েছি। আর আজ আমার দলের ছেলেরাই আমাকে মারল। এটাই বোধ হয় পাওনা ছিল। আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাচ্ছি যে একজন মহিলার শাসনে আমাদের মত মহিলাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।”

এদিকে এই বিষয়ে গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক তথা হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি মানস মজুমদারকে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি। আরও পড়ুন: ‘মাও আমার গলা টিপে ধরেছিল…’, বাড়ি থেকে এক ছেলেকে উত্খাত করার ‘লড়াইয়ে’ সামিল মা-ও!