হুগলি: প্রায়শই নজরে আসে নাবালিকার বিয়ে ভাঙতে পুলিশের তৎপরতার ছবি। তবে এবার সে ছবিতে খানিকটা বদল নজরে এল। বাড়ির লোকজন বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলায় নাবালিকা নিজেই ছুটল পঞ্চায়েতে। তার আর্জি, বিয়ে নয় তাকে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দেওয়া হোক। ধনিয়াখালি থানা এলাকার এই ঘটনাকে নজির হিসাবে তুলে ধরতে চায় প্রশাসন। পঞ্চায়েতের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সে সমস্তরকম সহযোগিতা পাবে। আপাতত পুলিশ তাকে হোমে রাখার ব্যবস্থা করেছে। জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফল করা তার স্বপ্ন। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এরইমধ্যে তার মা বিয়ের জন্য তোড়জোর শুরু করে। মায়ের সে পরিকল্পনা জেনে গিয়েছিল মেয়ে। এই নিয়ে বাড়িতে অশান্তিও হচ্ছিল।
আগামী ২ এপ্রিল থেকে ওই ছাত্রীর একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তার আগে সোমবার স্কুলে গিয়েছিল রেজিস্ট্রেশন করাতে। সেখান থেকেই বিকেল চারটে নাগাদ সোজা গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় সে। আর্জি জানায়, তার বাড়ির লোকজন বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এমনকী বাড়িতে তাকে মারধরও করা হচ্ছে বলে পঞ্চায়েত প্রধানকে জানায়। তার আর্জি ছিল, যেভাবেই হোক বিয়ের বদলে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিক প্রধান।
পঞ্চায়েত প্রধান পুরো বিষয়টি থানায় জানান। এরপরই সেখানে পুলিশ হাজির হয়। ছাত্রীর অভিযোগ, সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু বাড়ির লোক সে সুযোগ দিচ্ছে না। এরপরই পুলিশ ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে এবং হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর মা পারিবারিক অশান্তির কারণে দেড় বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। সেই থেকে তারকেশ্বরে বাপের বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে থাকেন। তিনি চান মেয়ের বিয়ে দিতে। কিন্তু মেয়ে তাতে রাজি নয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দিচ্ছিল পরিবার। বাবা, মা দু’জনকেই থানায় ডেকে পাঠানো হয়। অন্যদিকে নাবালিকার নিরাপত্তার কথা ভেবে উত্তরপাড়া হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।