লিলুয়া: বাড়ি থেকে ক্রমাগত দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। যার কারণে টেকা দায় হয়ে পড়েছিল প্রতিবেশীদের। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। এদিকে সময় বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে ক্রমশ দানা বাঁধছিল সন্দেহ। পুলিশ আসতেই হল সবটার খোলাশা। উদ্ধার হল তিন তিনটে মৃতদেহ। হাওড়ার লিলুয়ার ঘটনা।
সূত্রের খবর, লিলুয়ার বেলগাছিয়ার বাসিন্দা অভিজিৎ দাস। পেশায় ব্যবসায়ী তিনি। পরিবারে ছিল তাঁর স্ত্রী দেবযানী দাস ও তেরো বছরের মেয়ে সমৃদ্ধি দাস। স্থানীয়রা জানিয়েছেন গত মঙ্গলবার শেষ দেখা গিয়েছিল তাঁদের। এরপর আজ হঠাৎ বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। যার জেরে এলাকাবাসী খবর দেয় পুলিশে। ঘটনাস্থানে আসে লিলুয়া থানার পুলিশ। দরজা ভেঙে দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন অভিজিৎবাবু। অন্যদিকে, স্ত্রী ও কন্যা মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। মৃতদেহর পাশ থেকে মিলেছে একটি হাতুড়ি ।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশের অনুমান, ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়া বা ধারদেনা থাকায় ওই হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রী ও কন্যাকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন অভিজিৎবাবু। যদিও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে লিলুয়া থানার পুলিশ।
দেবযানীর বাবার বক্তব্য, “পরিবারে অশান্তির কথা তাঁদের জানা ছিল না। তাঁরা ভেবেছিলেন চারদিন ধরে হয়ত কোথাও ঘুরতে গেছেন ওরা। কারণ দরজা বন্ধ ছিল বাইরে থেকে । আজ এলাকাবাসীর মুখ থেকে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারেন তাঁরা। ”
উল্লেখ্য, এর আগেও এমন রহস্য মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাস্থান বসিরহাট। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে চলছিল ছেলের সঙ্গে। তার পর ছিল স্ত্রীয়ের রহস্য মৃত্যু (Mystery death) নিয়ে ছেলের সঙ্গে ঠান্ডা-যুদ্ধ। প্রমাণ লোপাট করতে তাই নিজের ছেলেকেই শ্বাসরোধ করে খুন (Murder) করে বাবা! যার জেরে বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার রূপমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের রূপমারি গ্রাম। এখানকার বাসিন্দা বছর ৬২-এর তুষার মল্লিক পেশায় কাঠের ব্যবসায়ী তুষারের প্রচুর জায়গা-জমি রয়েছে। তাঁর কাঠের করাতকল রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু ব্যবসা আছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২২ বছরের ছেলে মিলটন মল্লিকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বচসা, গন্ডগোল চলছিল বাবার। এদিকে বছর দশেক আগে তুষারবাবুর স্ত্রী ময়না মল্লিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। যা ছেললে মিলটন নাকি মেননে নিতেে পারেনি। মায়ের মৃত্যুর জন্য সে দায়ী করত তাঁর বাবাকে।
মিলটনের দিদার অভিযোগ, বয়স বাড়ার সঙ্গে তাঁর মেয়ের মৃত্যুর পিছনের আসল ঘটনা জানতে পারে নাতি। বুঝতে পারে তাঁর মাকে পরিকল্পনা করে খুন করেছিল বাবা। এমনটাই অভিযোগ ছিল মিলটেনরও। তখন থেকেই বাবার সঙ্গে গন্ডগোল শুরু। এ নিয়ে বহুবার বচসা হয়েছে। একাধিকবার বড়সড় ঝামেলা হয় বাবা-ছেলের। তার পর এই বিপুল সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ও গন্ডগোল আরও দীর্ঘ হয়। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গন্ডগোলের জেরে এলাকায় সালিশি সভা বসলেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।
এর পর ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর তার গলায় দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেয় বাবা-ই, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। এই ঘটনায় আত্মীয় ও গ্রামবাসীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে বাবা তুষার মল্লিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে ইতিমধ্যে ছেলেকে খুন করার কথা স্বীকার করে নেন তিনি।
আরও পড়ুন: Crime News: পুলিশকর্মীর পরিবারের ওপর গুলি চালিয়ে মেঘালয়ে গা ঢাকা! ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সহ ৪