হাওড়া: ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করল সিবিআই। অভিযোগ, এদের বিরুদ্ধে ২৮ অগস্ট মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থা। কিন্তু ৩০ অগস্ট এই ১৩ জনের জামিন মঞ্জুর হয়। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, কী ভাবে এই জামিন অভিযুক্তরা পেলেন? এই জামিন আইন বহির্ভূত বলেও দাবি সিবিআইয়ের। অভিযুক্তদের আটক করেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা। ১৩ জনকে হেফাজতে চেয়ে সোমবার হাওড়া জেলা আদালতের কাছে আবেদনও জানানো হয়।
বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যজুড়ে হিংসার অভিযোগ ওঠে। অধিকাংশ অভিযোগই ওঠে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীদের মারধর, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, বাড়িতে ভাঙচুরের মতো বিস্ফোরক সব অভিযোগ উঠতে শুরু করে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেরও একাধিক জেলায় এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়। এই তালিকায় রয়েছে হাওড়ার নামও।
গত ২ মে হাওড়ার ডোমজুড় থানার অন্তর্গত বাঁকড়া রাজীব পল্লি কলোনিতে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট ও মহিলাদের মারধর, শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত বহু বিজেপি কর্মী সমর্থক ঘরছাড়া বলে অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার গ্রহণের পর একাধিক বার রাজীব পল্লিতে তদন্তে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা।
আক্রান্তদের কাছ থেকে বয়ান সংগ্রহ করে সিবিআই। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এই এলাকা থেকে প্রথমে ৬ জনকে সিবিআই আটক করে। আরও দু’জনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। পরে মোট ১৩ জনকে আটক করে সিবিআই। এই ঘটনা ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক আলোড়ন শুরু হয়। ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের দাবি, বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ প্রত্যাখ্যান করায়, সেই জ্বালা যন্ত্রণা থেকে বিজেপি মিথ্যা মামলায় মানুষকে ফাঁসাতে চাইছে। সিবিআই দিয়ে তৃণমূল কর্মীদেরও ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন কল্যাণ ঘোষ।
At the instance of Rajib BANERJEE, @CBItweets picked up four persons who are already in bail,for committing alleged minor offence beyond the scope of Calcutta High court order.@AITCofficial .
— Kalyan Banerjee (@KBanerjee_AITC) September 6, 2021
পাল্টা বিজেপির রাজ্য নেতা উমেশ রায়ের বক্তব্য, যে ভাবে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস হয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে, বিজেপি কর্মীদের উপর যে হামলা হয়েছে তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত। পুলিশ শাসক দলের হয়ে কাজ করেছে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বহু বিজেপি কর্মী সমর্থক ঘরছাড়া রয়েছেন এখনও। তাঁদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ। সোমবার শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার টুইটারে এই ঘটনার পিছনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চক্রান্তেরও অভিযোগ তোলেন।
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, জামিন পেয়ে যাওয়া লোকজনকে কী ভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া যায়? এই ঘটনায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান শাসকদলের এই নেতা। আরও পড়ুন: TET মামলায় আরও কড়া হাইকোর্ট, বোর্ড সভাপতিকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ