Howrah School Scam: ৭ বছর ধরে স্কুলের অডিট করছিলেন এক মৃত ব্যক্তি! ‘ভূতের’ খোঁজ করতেই ‘চুপ’ হেডস্যর
Howrah School Scam: ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই অডিটর গোলকবিহারী মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হলেও প্রধান শিক্ষকের পেশ করা নথি অনুযায়ী মৃত গোলকবাবুই স্কুলের অডিট করেছেন! স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সজল বারুই-সহ শিক্ষকদের অভিযোগ এই ঘটনা আদতে দুর্নীতির গোলকধাঁধা!

হাওড়া: দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাঠস্থলেই দুর্নীতি! হাওড়ার স্কুলে সাত বছর ধরে দুর্নীতির ‘ভূত’ দিয়ে স্কুলের অডিট! মৃত অডিটর দিয়ে স্কুলের অডিট করানোর অভিযোগ। সহ শিক্ষকদের কাঠগড়ায় আনন্দনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষা মহলের অন্দরে। শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি অডিটর দিয়ে তদন্ত বিকাশভবনের। তদন্তে প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণে এফআইআর রুজুর পরামর্শ বিকাশভবনের আধিকারিকদের। তারপরই সরকারি অডিটরের নির্দেশে নিশ্চিন্দা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের।
২০২২ সালের জুলাইয়ে আনন্দনগর হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদে কাজে যোগ দেন সন্তুরঞ্জন সাহা। তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত স্কুল তহবিলের আয়-ব্যয়ের অডিট করান। নিয়মানুযায়ী, সরকারি তালিকায় নথিভুক্ত দিয়ে অডিটর করানোর নিয়ম। অভিযোগ, সেই পথে না হেঁটে বেসরকারি অডিটরকে দিয়ে অডিট করানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান শিক্ষক।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই অডিটর গোলকবিহারী মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হলেও প্রধান শিক্ষকের পেশ করা নথি অনুযায়ী মৃত গোলকবাবুই স্কুলের অডিট করেছেন! স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সজল বারুই-সহ শিক্ষকদের অভিযোগ এই ঘটনা আদতে দুর্নীতির গোলকধাঁধা! স্কুল তহবিল নয়ছয়ের উদ্দেশ্যেই এ কাজ করেছেন প্রধান শিক্ষক। ২০২৫ সালের মার্চে প্রধান শিক্ষকের কথা পরিচালন সমিতির সভাপতি বিকাশ ভবনের নজরে আনলে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে অডিটর নিয়োগ করে বিকাশভবন। এপ্রিলে সভাপতির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিশ্চিন্দা থানায় এফআইআর দায়েরের পরামর্শ দেন বিকশভবন নিযুক্ত অডিটর। ২৪ মে নিশ্চিন্দা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি পরিচালন সমিতির সভাপতির।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এমন কীর্তির কারণ জানতে আনন্দনগর হাইস্কুলে পৌঁছয় টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরা। টিভি নাইনের ক্যামেরা দেখে কার্যালয় থেকে কার্যত পালিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। বারবার প্রতিক্রিয়া নেওয়ার চেষ্টা হলেও তিনি শুধু বললেন, এটা তদন্তাধীন বিষয়। আমি এখন এ নিয়ে কিছুই বলব না। বিষয়টি বিকাশ ভবনের বিচারাধীন বলে যাবতীয় প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। এদিকে শুধু অডিট দুর্নীতি নয়। মিড ডে মিল থেকে স্কুলের পরিকাঠামোয় সরকারি বরাদ্দ নিয়েও সরব স্কুলের শিক্ষকেরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এমন কীর্তি সম্পর্কে পড়ুয়ারা জানতে চাইলে কী বলবেন শিক্ষকেরা? প্রশ্ন শুনে অস্বস্তিতে পড়ে যান আনন্দনগর হাইস্কুলের শিক্ষকেরা। চাপাউতোর চলছে শিক্ষা মহলে।
