হাওড়া: সব ঠিক। শুধু বরের আসা বাকি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যাচ্ছিল বিয়ে। কারণ? ট্রেন মিস! বরযাত্রী-সহ বর স্টেশনের কাছাকাছি এসে গেলেও জাস্ট একটুর জন্য বেরিয়ে যাচ্ছিল ট্রেন। শেষে মাঠে নামলেন রেরকর্তারা। তাতেই শেষ পর্যন্ত হল মুশকিল আসান। অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল হাওড়া স্টেশন। সূত্রের খবর, মুম্বই থেকে গুয়াহাটি যাচ্ছিল বর যাত্রীদের দল। প্রথমে তাঁরা ধরেছিলেন গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস। সেই ট্রেন চড়ে হাওড়া। তারপর সেখান থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস। পরিকল্পনা ছিল এমনটাই। কিন্তু, মাঝরাস্তায় প্রায় ৩ ঘণ্টা লেট করে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস। তাতেই বিপত্তি।
শেষ পর্যন্ত হাওড়া স্টেশনে পৌঁছানোর আগে দেখা যায় সরাইঘাটের ছেড়ে যাওয়ার টাইম হয়ে গিয়েছে। এদিকে ৩৫ জনের ওই দলে ছিলেন অনেক বৃদ্ধ-বাচ্চারাও। তাই গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস হাওড়ায় ঢুকলেও দৌড়ে সরাইঘাটে ওঠা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু, এই ট্রেনে ছেড়ে গেলে বিয়েই কার্যত ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম। অবস্থা হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে দ্রুত সোশ্যাল মাধ্য়মে রেল মন্ত্রকে বিষয়টি জানান বরযাত্রীদের দলে থাকা চন্দ্রশেখর বাগ। ট্যাগ করেন রেল মন্ত্রীকেও। পরিস্থিত বুঝতে পেরে তৎপর হন রেলকর্তারাও।
শেষে হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার এবং সিনিয়র ডিসিএম হাওড়ার নির্দেশে হাওড়া স্টেশনে মুহূর্তের মধ্যে তৈরি হয়ে যায় বিশেষ করিডর। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বেশ কিছু সময়ের জন্য হাওড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস। অন্যদিকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করা হয় গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের চালককেও। দ্রুত তাঁকে ট্রেন নিয়ে হাওড়া স্টেশনে ঢুকতে বলা হয়।
২১ নম্বরে ঢোকার কথা গীতাঞ্জলির, ৯ দাঁড়িয়ে সরাইঘাট। ততক্ষণে বরযাত্রীদের সঙ্গে থাকা জিনসপত্র দ্রুত ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশনে ততক্ষণে তৎপর রেল কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত হাওড়ায় দেখা মেলে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের। ঢোকা মাত্রই দ্রুত বরযাত্রীদের সরাইঘাটে তুলে দেন রেল কর্মীরা। অবশেষে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বরযাত্রীরা। রেলের এই উদ্যোগে আল্পুত সকলেই। খুশি রেল কর্তারাও। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “রেল সব সময়ই মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। এই ঘটনা প্রমাণ করে কিছু ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও মানুষের জন্য কাজ করি। বরকে তাঁর নতুন জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানাই।”