
জলপাইগুড়ি: নিখোঁজের তালিকা যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শেষ পাওয়া আপডেটে জানা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে বাংলার ৫ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এদিনই আবার নতুন করে দক্ষিণ দিনাজপুর ও বাঁকুড়া থেকে দু’জনের কুম্ভে গিয়ে নিখোঁজের খবর এসেছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে সব পরিবারেই। রাজনৈতিক মহলেও চলছে তরজা। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের সামলাতে ব্যস্ত যোগী রাজ্যের পুলিশ। ফলে তারা কীভাবে রেসমইত মেহারদের নিরাপত্তা দেবে? হারিয়ে যাওয়া আদিবাসী মহিলা বাড়ি ফিরতেই কুম্ভ মেলার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম। সুর চড়াচ্ছে তৃণমূলও। মহাকুম্ভে গিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে স্বামীর কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির রেসমইত মেহার। দিকভ্রান্ত হয়ে ঘুরছিলেন এদিক-ওদিক। দুদিন পেটে কিছু পড়েনি বৃদ্ধার। অভিযোগ, পুলিশের কাছে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সহযোগিতা করা তো দূর, উল্টে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শেষে একা একাই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু, চাপেন ভুল ট্রেনে। চলে গিয়েছিলেন বেনারস। সেখানে গিয়ে এক সহৃদয় ব্যাক্তির সহায়তায় অন্য ট্রেন ধরে শুক্রবার দুপুরে NJP আসেন। সেখান থেকে রাতে বাড়ি ফিরলেন জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগানের বাসিন্দা রেসমেইই মেহার।
বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে রাতেই তার বাড়িতে পৌঁছে যান রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। মহিলার মুখেই তাঁর ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। সব শুনে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন খগেশ্বর। এখান থেকেই শুরু রাজনৈতিক তরজা। ক্ষোভ উগরে দেন রেসমইত নিজেও। বলেন, খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার অসহায় অবস্থা দেখেও পুলিশ আমাকে কোনও সাহায্য করেনি।
তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “উত্তরপ্রদেশ পুলিশের জঘন্য ভূমিকা শুনে আমি অবাক। ওরা মানুষকে সহায়তা করে না। উল্টে মারে। মোদী আর যোগীর অপদার্থতায় আজ এতবড় বিপর্যয় ঘটে গেল। এখন দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।” বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যামপ্রসাদ বলেন, “খগেশ্বর রায় কুড়ি টাকার পাউচ খেয়ে ভুলভাল বকে যাচ্ছেন। সারা পৃথিবী থেকে কোটি কোটি মানুষ প্রয়াগরাজে এসেছে। যোগী আর মোদীর ব্যবস্থায় প্রত্যেকে খুশি। এতবড় আয়োজনে কখনও একটু আধটু ভুল ত্রুটি হয়ে যায়।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক পীযূষ মিশ্র বলেন, “মানুষ তার ধর্ম পালন করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ সরকারের সমস্ত প্রধান ব্যক্তিরা কুম্ভ মেলায় নিজেরাই স্নান করতে ব্যস্ত। আর সমস্ত পুলিশ ব্যস্ত তাদের নিরাপত্তা দিতে। আর মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।”