
কলকাতা: কেমন অমানবিক ভাবুন। নিজের দেশের বাসিন্দাকেই ফিরতে দিতে নারাজ বিজিবি। জোর করে বাংলাদেশিকে ভারতীয় বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। চূড়ান্ত আমনবিকতার নজির বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের জওয়ানদের। বাংলাদেশের বাসিন্দা বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবককে জোর করে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল তারা। কিন্তু এতই সোজা? সীমান্ত আগলে থাকা বিএসএফ বুঝিয়ে দিল তা সম্ভব না। দিল কড়া দাওয়াই। রাতভর চলল প্রহরা। শেষে বিএসএফের সঙ্গে পেরে না উঠে রাতভর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মাঝেই যুবককে ফেলে রাখল জওয়ানরা। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।
জানা গিয়েছে, বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের জওয়ানরা জোর করে ওই যুবককে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বিএসএফ সেই সময় রুখে দাঁড়ায়। ওই যুবকের পরিচয় কী এবং বাংলাদেশে কবে গিয়েছিলেন,সে ব্যাপারে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশকে তথ্য দিতে বলে।
কিন্তু ওই যুবক বিশেষভাবে সক্ষম হওয়ায় ভুল বুঝিয়ে ভারতের দিকে ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে রীতিমতো চাপ তৈরি করতে থাকে বিজিবি। কিন্তু বিএসএফ নিজেদের অবস্থানে ছিল অনড়। কোনও ভাবেই ওই যুবককে নিজেদের ভূখণ্ডে ঢোকায়নি। বিএসএফ বিজিবিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়,ওই যুবক তাঁদের দেশের নয়। তাই বিজিবি’র জওয়ানরা যেন তাঁকে ফেরত নিয়ে চলে যায়। কিন্তু বিজিবি নেয়নি। বিএসএফও নিজের অবস্থানে অনড় ছিল।
এই অবস্থায় বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের জওয়ানদের অমানবিক চেহারা ফুটে ওঠে। বিশেষভাবে সক্ষম ওই যুবককে দুটি দেশের মাঝখানে ফেলে রেখে বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের জওয়ানরা অন্ধকারে নিজেদের ভূখণ্ডে ফিরে যায়। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া অংশে ওই যুবক সারারাত পড়েছিল। খাবার থেকে জল কিছুই পায়নি। রাতভর সে শুয়েছিল খোলা আকাশ এবং খালি জমির উপরে।
সকালে বিএসএফ জওয়ানরা ওই যুবককে দেখতে পেয়ে ছুটে যান এবং জল ও কিছু খাবারের ব্যবস্থা করে দেন। এরপর বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের জওয়ানরা ছুটে আসেন এবং ফের চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে বিএসএফের উপরে। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানরা নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল। এরপর দফায় দফায় ফ্ল্যাগ মিটিং হয় দু’পক্ষের মধ্যে।
পরবর্তীতে খতিয়ে দেখা যায়,ওই যুবক বাংলাদেশেরই বাসিন্দা। টংভাঙ্গা এলাকায় বাড়ি তাঁর। নাম রাসেল ইসলাম। বছর চব্বিশের রাসেল কোনওভাবে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের থেকে। বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের জওয়ানরা বিষয়টি বুঝতে পেরে রীতিমতো লজ্জিত হন এবং ওই যুবককে বাংলাদেশের তার পরিবারের হাতে তুলে দেন।