জলপাইগুড়ি: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিএসএফ (BSF) এর ভূমিকা ঠিক কী ছিল তা নিয়ে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের তরফে হল একটি শৌর্য প্রদর্শনী যাত্রা। স্কুলপড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে দারুণ সারা ফেলেছে।
মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর উপলক্ষে বিএসএফের তরফে স্বর্ণজয়ন্তী শৌর্য প্রদর্শনী যাত্রা গত ৩ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত পার করে এই র্যালি মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরে ফণীন্দ্র দেব বিদ্যালয়ে এসে পৌঁছয়। এদিন জলপাইগুড়ি ফনীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের মাঠে বিএসএফ-এর জলপাইগুড়ি সেক্টরের ১৮০ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের পক্ষ থেকে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যেখানে বিএসএফ জওয়ানেরা ১৯৭১ সালে বাংলাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কীভাবে তাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে তালিম দিয়ে পাকিস্থানি ফৌজের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করেছিলেন, কীভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে সেই ফৌজ, তার বিস্তারিত তথ্য ছবি ও তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়।
এ নিয়ে ১৮০ নম্বর ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার বিজয় পাল সিং বলেন, “সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিএসএফের সুসম্পর্কের বিষয়টি যেমন আমরা তুলে ধরছি, তেমনি মুক্তিযুদ্ধে বিএসএফ – এর অবদান কী ছিল, সেই বিষয়টি আমরা চিত্র প্রদর্শিনীর মাধ্যমে তুলে ধরছি। এর পর র্যালিটি চ্যারাবান্ধা হয়ে কোচবিহারের যাবে”।
এই প্রদর্শনী ও পদযাত্রা ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। বিশেষতঃ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে। এমনই এক স্কুল পড়ুয়া আরিয়ান বোসের কথায়, “আজকের র্যালির মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিএসএফ- এর ভূমিকা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। যা আমাদের অনেকটাই অজানা ছিল। এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের খুব কাজে লেগেছে”।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর বিএসএফের এক্তিয়ার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি বিরোধিতা করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। কয়েক দিন আগে পঞ্জব কংগ্রেস সরকার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই এক্তিয়ার বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে বিএসএফ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে আবার এ রাজ্যের বিরোধী শিবির বিজেপি তীব্র বিরোধিতা করেছে। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্য পুলিশ ও বিএসএফের সম্পর্ক খারাপ করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের পদক্ষেপের আর্জি জানান টুইটারে। একই সুর শোনা গিয়েছে দিলীপ ঘোষের গলাতেও। অন্যদিকে কিছুদিন আগে বিধানসভাতেই তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের এক মন্তব্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়। তার পর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে বিশেষ নজর দিতে দেখা গিয়েছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সকে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুয়ারের’ আদিগঙ্গা আছে সেই আদিতেই, মশার কামড়-কটূ গন্ধে অতিষ্ঠ তিলোত্তমাবাসী