জলপাইগুড়ি: সোমবারের ঘটনা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় ময়নাগুড়ির নির্যাতিতা। ফাঁকা ঘরে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় সে। নাম জড়ায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর। পরে থানায় অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য হমকির মুখে পড়তে হয় মেয়েটির গোটা পরিবারকে। শেষমেশ ভয়ে-আতঙ্কে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় সে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সোমবারই জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পৃথক জায়গায় তিন নাবালিকার শ্লীলতাহানির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।এরমধ্যে এক ৪ বছরের নাবালিকাও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবার দাবীতে সরব হয়েছে বাম ও বিজেপি।
প্রথম ঘটনা ময়নাগুড়ির এক প্রতিবন্ধী নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। আজ তাকে আদালতে তোলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত এক এলাকা থেকে শ্লীলতাহানির ঘটনা সামনে এসেছে। কোতোয়ালি থানা এলাকার আরও এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানা গিয়েছে। এর মধ্যে
একজন শিশুর বয়স ৪ বছর।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডাক্তার জয়ন্ত কুমার রায়। সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে টিম নিয়ে এসে নির্যাতিতা পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পিযুশ মিশ্র। তিনিও এদিন রাজনৈতিক বেড়াজাল ভেঙে এগিয়ে এসে পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবার আবেদন করেছেন।
অপরদিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, অভিযুক্তরা তৃণমূল আশ্রিত। সেই কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা নেওয়া নিয়ে অনেকসময় টালবাহানা করছে পুলিশ। এমনকী সঠিক সময়ে তারা পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও, ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুব তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জী। তাঁর বক্তব্য তৃণমূল কখনোই অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করেনি। উলটে তিনি পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “ময়নাগুড়ি থেকে শুরু করে সমস্ত ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পক্সো আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে।” ময়নাগুড়ির ঘটনায় অভিযুক্তরা জেলে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত সাংসদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “এই ব্যাপারে আরও বেশি করে সচেতনতা প্রচার নিয়ে ভাবা হচ্ছে।” দেবর্ষি বাবু বলেন, “গত কয়েকদিনের নাবালিকাদের শ্লীলতাহানি ঘটনা গুলিতে দেখা যাচ্ছে যারা অভিযুক্ত তারা সকলেই প্রতিবেশী। তাই এই ব্যাপারে শুধু পুলিশ নয় সামাজিক ভাবে সকলের দেখা উচিৎ কেন এমন ঘটনা ঘটছে।”