জলপাইগুড়ি: সম্প্রতি জলপাইগুড়ির একটি চা বাগানে ভালুকের আতঙ্কে ড্রোন উড়িয়ে চলে তল্লাশি অভিযান। এরপরও তার কোনও দেখা মেলেনি। গত কয়েকদিনে একাধিকবার ভালুক নিয়ে নানা কথা ছড়িয়েছে। মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার ভালুক নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করল বনদফতর।
অভিযোগ, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভালুক নিয়ে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক শ্রেণীর মানুষ লাগাতার গুজব ছড়াচ্ছেন। তাঁদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বনদফতরের তরফে। কোনও গুজব যাতে না ছড়ানো হয় তা নিয়ে বার্তা দিয়েছিল বনদফতর। কিন্তু এরপরও একাংশ ভুয়ো খবর ছড়িয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বনদফতরের নিষেধ না মানায় এবার আইনের দ্বারস্থ হল তারা।
ঘটনায় গরুমারা ওয়াইল্ড লাইফ ডিভিশনের এডিএফও জন্মেজয় পাল বলেন, “কিছুদিন ধরে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ভালুক দেখা গিয়েছে। তাদের ধরে আমরা ইতিমধ্যে জঙ্গলে ফেরতও পাঠাতে সক্ষম হয়েছি। কিছু জায়গায় আবার ভালুকের অস্তিত্বের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সরাসরি না দেখা যাওয়ার ফলে আমরা তাকে উদ্ধার করতে পারছি না। কিন্তু এলাকাগুলিতে আমাদের কর্মীরা গিয়ে সচেতনতা প্রচার করে আসছে। তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কিছু মানুষ গুজবও ছড়াচ্ছেন। আমাদের তরফ থেকে আগেই নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু নিষেধ না মানায় জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকার একজনের বিরুদ্ধে সাইবার থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।”
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতেও কাদোবাড়ি এলাকা থেকে ভালুক নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে রাতেই ওই এলাকায় যান পরিবেশ কর্মী স্বরূপ মণ্ডল ও তাঁর দল। তাঁরা সেখানকার একটি বিয়ে বাড়িতে ঢুকে সচেতনতা প্রচারও চালান।
নভেম্বরের শেষের দিকেই ডুয়ার্সের লোকালয়ে ভালুক ঢুকে পড়ে। সম্প্রতি ভালুকের হামলায় মৃত্যু হয় এক কিশোরের। তার পর সেই ভালুককেও পিটিয়ে মেরে ফেলে স্থানীয়রা বলে অভিযোগ ওঠে। এরই মধ্যে জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে ভালুকের আতঙ্ক ছড়ায়। ১৯ ও ২০ নম্বর সেকশনে এক প্রাণীর পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। এরপরই রাতভর তল্লাশি শুরু হয়। কিন্তু কোনও ভালুকের খোঁজ মেলেনি। পরদিন ওড়ানো হয় ড্রোনও।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে তিস্তা নদীর চর-সহ বিভিন্ন এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেয় গরুমারা ওয়াইল্ড লাইফ ডিভিশন। পরে গরুমারা ডিভিশনের ডিএফও অংশু যাদব বলেন, “আমরা উচ্চক্ষমতাসমপন্ন ড্রোন দিয়ে তিস্তা নদীর অনেকাংশেই তল্লাশি চালিয়েছি। ড্রোন থেকে পাওয়া ভিডিয়োতে ভাল্লুক বা অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর ছবি পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা সতর্ক রয়েছি। সকলের কাছেই বিশেষ অনুরোধ কোনওভাবে যদি ভাল্লুকটিকে দেখতে পাওয়া যায় তবে আমাদের দ্রুত খবর দিন। অযথা গুজব ছড়াবেন না।”
আরও পড়ুন: ‘তুমি রবে নীরবে…’, সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে ফেসবুক পোস্ট ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর