Jalpaiguri: প্রধান শিক্ষিকার কান ধরে ওঠবস, রিপোর্ট তলব মমতার
জলপাইগুড়ি শহরের প্রয়াত এক অত্যন্ত স্বনামধন্য আইনজীবীর পুত্র সৈকত। কলেজ জীবন থেকেই ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। এমনকী বাম জমানার শেষ লগ্নে উত্তরবঙ্গে শিক্ষা দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি জলপাইগুড়ি পৌরসভার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। পাশাপাশি তিনি তৃণমূল কংগ্রেস দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।

জলপাইগুড়ি: প্রধান শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবোস। সম্প্রতি, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যায়, তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায় প্রধান শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছেন। এবার সেই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করলেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই ঘটনার তদন্ত করতে বলেছেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম ভট্টাচার্যকে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি তাঁর এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে শহরের ১৫৩ বছরের পুরোনো স্কুল ‘জলপাইগুড়ি সুনীতি বালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়’-এর প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাসকে কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে। ঘটনায় নাম জুড়েছে সৈকতের। যদিও, পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, দাবি করেছেন ভিডিয়োটি AI দ্বারা নির্মিত। এবং এই নিয়ে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
তৃনমূলের জেলা সম্পাদক বিকাশ মালাকার বলেন, “ব্যাপারটা জলপাইগুড়িতে আলোচনা হয়েছে। দলের নেত্রীর কানে গিয়েছে। এবং উনি নির্দেশ দিয়েছেন গৌতম দেবকে এর তদন্ত করে দেখার জন্য এটা সঠিক কি না।”
কে এই সৈকত চট্টোপাধ্যায়?
জলপাইগুড়ি শহরের প্রয়াত এক অত্যন্ত স্বনামধন্য আইনজীবীর পুত্র সৈকত। কলেজ জীবন থেকেই ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। এমনকী বাম জমানার শেষ লগ্নে উত্তরবঙ্গে শিক্ষা দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি জলপাইগুড়ি পৌরসভার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। পাশাপাশি তিনি তৃণমূল কংগ্রেস দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। সম্প্রতি দল তাঁকে চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই শপথ গ্রহণ করে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে চলেছেন সৈকত।
সৈকতের বিরুদ্ধে বিগত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক ভাবে যেইসব অভিযোগ উঠেছে…
১) ২০১৪ সালে জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহা বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে SFI জেতে।তদানীন্তন প্রিন্সিপাল ডক্টর শান্তা ছেত্রীকে রেজাল্ট বদলে TMCP কে জেতাবার জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। অস্বীকার করলে তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ।
২) ২০১৪ সালে জলপাইগুড়ি শহরে কর্মরত এক ট্রাফিক পুলিশের কন্সটেবলকে চড় মারেন বলে অভিযোগ সৈকতের বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে আদালতে জামিন নিতে হয়।
৩) ২০২২ সালের পৌর নির্বাচনে ছাপ্পা ভোট ও বুথ দখলের অভিযোগ ওঠে সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। জলপাইগুড়ির পৌর নির্বাচনে যা বেনজির। আর নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে শাসক দল।
৪) ২০২৩ সালে জলপাইগুড়ির সমাজ কর্মী দম্পতির আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার হন। পরে জামিন নেন। ওই দম্পতি বিজেপি বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জী ভাই ও ভাই বৌ।
৫) ২০২৫ সালে প্রধান শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস কাণ্ড সামনে এসেছে।
