জলপাইগুড়ি: সমাজ সেবাই করিমুল হকের ধর্ম। যে কোনও সময় মানুষের বিপদের কথা শুনলে ছুটে যান তিনি। কেন্দ্র সরকার তাঁর এই মহান ব্রতের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিতও করেছে। উত্তরবঙ্গের এই ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা’ এবার এক নিখোঁজ যুবতীকে ফিরিয়ে দিলেন তার পরিবারের কাছে। কিষাণগঞ্জ থানা এলাকার ওই যুবতী মানসিক ভারসাম্যহীন। চলতি মাসের শুরুতে নিখোঁজ হয়ে যান। প্রায় ১৩ দিন তাঁর কোনও খোঁজ ছিল না। ১৪ এপ্রিল গজলডোবা ক্যানেল রোড থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন পদ্মশ্রী করিমুল হক। ক্রান্তি পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি। করিমুল হকের বাইক অ্যাম্বুলেন্সের কথা সকলেই জানেন। দুর্গম পথে ওই অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে চাপিয়েই হাসপাতালে পৌঁছে দেন তিনি। পয়লা বৈশাখের দুপুরে এরকমই এক রোগীকে নিয়ে তিস্তা ক্যানেল রোড ধরে যাচ্ছিলেন তিনি। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় রাস্তায় এক যুবতীকে ক্যানেল রোড ধরে ছুটে বেড়াতে দেখেন।
এরপরই বাইক থামিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রশ্ন উত্তরে করিমুল হক বুঝতে পারেন, মেয়েটির সম্পূর্ণ সুস্থ নন। এরপরই এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মেয়েটিকে করিমুল হক নিজের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্ত্রীকে জানিয়ে দেন, পোশাক বদলে ওই যুবতীকে যেন খাইয়ে দেন। এরপরই বাইক নিয়ে উত্তরবঙ্গ হাসপাতালে যান। রোগীকে ভর্তি করিয়ে বাড়িতে পৌঁছন।
উদ্ধার হওয়া যুবতীর সঙ্গে কথা বলে অবশ্য সেরকম কিছুই জানতে পারেননি করিমুল হক। শুধু কথায় কথায় কিষাণগঞ্জটুকু বলতে পারেন যুবতী। তার রেশ ধরেই থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পাশে ছিল স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। বহু চেষ্টার পর যুবতীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন তাঁরা। ক্রান্তি ফাঁড়িতে যোগাযোগের মাধ্যমে রবিবার রাতে মেয়েটিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
করিমুল হক বলেন, “মেয়েটিকে দেখে প্রথমেই মনে হয়েছিল এলাকার নন। কিন্তু এভাবে এক যুবতী রাস্তায় ঘুরলেও তো বিপদ হতে পারে। তাই আমি তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিই।” ক্রান্তি ফাঁড়ির ওসি সুব্রত গুন জানান, তাঁদের মহিলা সিভিক টিম মেয়েটিকে খাইয়ে দাইয়ে, নতুন পোশাক পরিয়ে বাড়িতে পাঠায়। ওই যুবতীর দাদা জানান, ১ এপ্রিল নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বোন। এতদিন পর বোনকে ফিরে পেয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Lakshmir Bhandar: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নবান্নের, জেলা জেলায় পৌঁছেছে বার্তাও