জলপাইগুড়ি: মান ভেঙেছিল আগেই। নির্দলের হয়ে ভোটে লড়বেন বলেও পরে মত বদল করেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতা মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মন বদল হলেও, এ ওয়ার্ডে দল যাঁকে প্রতীক দিয়েছে, সেই তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু বৃহস্পতি অবশেষে সে ছবিতেও বদল এল। এমনকী হাইকোর্টের রায় মলয়ের অনুকূলে থাকলেও তিনি জানিয়ে দিলেন অন্য কোনও প্রতীকে তিনি ভোটে লড়বেন না। দল যাঁকে প্রার্থী করেছে, তাঁকেই সমস্ত সমর্থন জানাবেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জলপাইগুড়ি জেলায় যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন। শহরে তিনি আদি তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু এবার পুরভোটে দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তাঁর নাম। ১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে প্রথম তালিকায় নাম ছিল জলপাইগুড়ি রায়কত পাড়া এলাকার বাসিন্দা তথা মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে দ্বিতীয় তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ পড়ে। সেখানে নাম আসে বর্তমান যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসাবে এলাকায় পরিচিত যুব তৃণমূল নেত্রী নীলম শর্মার। আর এতেই মলয় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন।
এতেই দলের প্রতি তীব্র অভিমানে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নও দাখিল করার পরিকল্পনা নেন। অভিযোগ, মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলারই রায়দান হয় বুধবার। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, মলয় বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনয়ন দাখিল করতে পারবেন। এর জন্য সমস্তরকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশও দেয় আদালত। এরপরই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, তবে কি মলয় ভোটে লড়বেন নির্দলের হয়ে। তৃণমূলের অন্দরেও অস্বস্তি ছিল। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যেই মলয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তিনি দলের সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দিচ্ছেন।
মলয় বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, “আমি বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলে ছিলাম এবং এখনও আছি। তবে হয়ত আমি পুরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে কারও অসুবিধা হবে। তাই প্রার্থী তালিকা থেকে আমার নামটা বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে আমি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেছি। আমাকে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এখনও ডাকেনি। ডাকলে নিশ্চয়ই প্রচারে যাব।”
অবশেষে বৃহস্পতিবার রাজ্য়ের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতি মান ভাঙল মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করলেন তিনি। একইসঙ্গে জানালেন, “ও বয়সে অনেকটাই ছোট। আমার ভাইঝি। আমি কাকা। ও প্রণাম করল, আমি আশীর্বাদও করলাম।” এদিন তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে মিছিলেও হাঁটেন মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই অস্বস্তি বাড়িয়েছেন এই নেতা। তবে মন্ত্রী অরূপের উপস্থিতিতে সমস্ত জট কাটল কি না তা ২৭ তারিখের ভোটের পরই বোঝা যাবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: Anis Khan Death: অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হল আমতা থানার ওসিকে, নতুন ওসি কিঙ্কর মণ্ডল