হুগলি: রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) তৃণমূলে (TMC) ফেরা নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। এবার প্রকাশ্যে রাজীব প্রসঙ্গে আরও বিস্ফোরক তিনি। ভোটের আগে হাওড়ায় কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের এনে দাঙ্গা করানোর পরিকল্পনা ছিল রাজীবের, বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন তিনি।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “খুব ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন না। ১০ এপ্রিল নির্বাচন হল। ঠিক তার ৫ দিন আগে বাকড়াতে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের এনে মিছিল করে রায়ট বাধানোর চেষ্টা করেছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন পর্যবেক্ষকরা নির্দেশ পুলিশ সেই মিছিল আটকে দেয়। পুলিশও তো তখন নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে ছিল। আর পর্যবেক্ষকরা তো আমাদের লোক নন। তাহলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সেদিন মিছিল করত, কী হত? বাকড়াতে তো দাঙ্গা লেগে যেত! আজকে খুব চোখ পাল্টি করে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলছ?”
প্রসঙ্গত, শনিবার কুণাল ঘোষের বাড়িতে সৌজন্য সাক্ষাতে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়ে প্রকাশ্যেই তিনি বিজেপির নীতির সমালোচনা করেন। সূত্র বলছে, রাজীব নাকি কুণালের কাছে এও বলেছেন, এ রাজ্যে সিএএ ও এনআরসি জারি করে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা চলছে। কুণাল-রাজীব সাক্ষাতের ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানেই রাজীব প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
অবশ্য শনিবারই এ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেছিলেন, “রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্যালু ইজ় জিরো, সেটা প্রমাণ করে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। এরপর ওঁকে নিলে কী উপকারিতা হবে না অপকারিতা হবে, সেটা দল বুঝবে! কুণাল যদি সিদ্ধান্ত নেয় নেবে…”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “রাজীববাবু তো ওঁদের দলেই ছিলেন। এখন কল্যাণবাবু নানাভাবে গালিগালাজ করছেন। দুদিন আগে তো কুণালবাবুকেই চিৎকার করে বলতে শুনেছি, যে মুকুলবাবুর জেল হওয়া দরকার। সেই কথা গিলে নিয়ে এখন মুকুলবাবু জিন্দাবাদ করতে হচ্ছে। সে কথা রাজীবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মনের কথা চেপে কথা বলতে হয়।”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়প্রকাশের পরামর্শ, “আপনি আইনজীবী, তবে আপনাকে একটা আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ। আপনাদের দলের তো ঠিক নেই। আপনাদের দল তো পরিবারতন্দ্র, একনায়কতন্ত্র। পরিবারের মতামত জেনে মুখ খুলবেন, না হলে বিপদ আসবে। কালকেই হয়তো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলতে হবে আপনাকে।”
আরও পড়ুন: কেবল দলবদলুরাই নন, পদ্মের পুরনো লোকও এবার মুকুলের হাত ধরে তৃণমূলের পথে!
অন্যদিকে আবার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বললেন, “দিদির কাছে অনুরোধ করব, অন্তত হাওড়ায় যারা বেরিয়ে চলে গিয়েছেন, তাদের আর ঘরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।” রাজীব প্রসঙ্গে এখন আড়াআড়িভাবে বিভক্ত তৃণমূল শিবির। তবে সূত্র বলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে এই সপ্তাহের শুরুতেই ফুল বদলাচ্ছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।