গতবছর (২০২২) কেটেছে তাবড়-তাবড় নেতামন্ত্রীদের হাতে হাতকড়া দেখে। এই বছরটাও তার অন্যথা হল না। নিত্যদিন খবরের শিরোনামে উঠে এল একের পর এক দুর্নীতির খবর। গ্রেফতার হলেন মন্ত্রী থেকে ‘চুনোপুটি’। এক দুর্নীতির গন্ধ পেয়ে প্রকাশ্যে এসেছে অন্য দুর্নীতির নাম। শিক্ষক নিয়োগ, পুর নিয়োগ থেকে রেশনের চাল-ডাল-আটা, দুর্নীতির অভিযোগের নিত্য নতুন সব তথ্য সামনে এসেছে। এখনও চলছে আদালতে মামলা।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক তেইশে যাঁরা ঢুকলেন গারদের পিছনে
রেশন চুরির অভিযোগ, গারদে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
গতবছর গ্রেফতার হয়েছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০২৩ গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির জালে ধরা পড়লেন তিনি। অভিযোগ, রেশন দুর্নীতিতে যে বিপুল টাকা তছরুপ হয়েছে তার সঙ্গে যোগ রয়েছে বালুর। ২৭ অক্টোবর ২০২৩ গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়।
ইডির হাতে গ্রেফতার বালু ঘনিষ্ঠ বাকিবুর
মূলত, পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে রেশন দুর্নীতির খোঁজ গোয়েন্দারা। এরপরই ধরা পড়েন বাকিবুর রহমান। ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হন বাকিবুর রহমান। তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই সামনে এসেছে আরও সম্পত্তি। ইডি-র দাবি, ১০০ কোটির বেশি টাকার সম্পত্তির মালিক বাকিবুর। আপাতত কারাগারেই দিন কাটছে তাঁর।
‘কীর্তিমান’ কালীঘাটের কাকু
এবার আসা যাক পুরনিয়োগ দুর্নীতিতে। আর তাতেই ইডি গ্রেফতার করে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে। ২০২৩ এর ৩০ মে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন তিনি। তথ্য গোপন, তদন্ত অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। বর্তমানে শারীর খারপ তাঁর। তাই এসএসকেএম-এর বেডেই শুয়ে কাকু। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে নাজেহাল হতে হচ্ছে ইডি-কে।
এ আর এক পার্থ
নিয়োগ দুর্নীতিতে গতবছর গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর এই বছর প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হলেন পার্থ সেন। এস বসুরায় অ্যান্ড কোম্পানির প্রোগ্রামার ছিলেন এই পার্থ। ওএমআর শিট কারচুপিতে নাম জড়ায় তাঁর।
তাপস মণ্ডলের কীর্তি
সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি এবং রাজ্যের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন তিনি। চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
বিধায়ক জীবনও গরাদের পিছনে
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। গত ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার হন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে প্রাথমিকভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা তাঁকে। তৃণমূল বিধায়ককে ধরতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় গোয়েন্দাদের। তদন্ত চলাকালীন নিজের একটি ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলেছিলেন তিনি। এছাড়াও গোয়েন্দাদের দাবি, সিঁদুর কৌটোর মধ্যে জীবনকৃষ্ণ মোবাইলের মেমরি কার্ড লুকিয়ে রেখেছিলেন।
কীর্তিমান প্রমোটার
পুর নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেন ইডি আধিকারিকরা। ২০ মার্চ গ্রেফতার হন তিনি। তাঁর বাড়ি থেকে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা মিলেছে। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে ওএমআর শিট।