মালদহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এদিকে শিশু সন্তান বাবা না মায়ের কাছে থাকবে তা নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা। সেই বিবাদ সামাল দিতে গ্রামে বসে সালিশি সভা (Salishi Sabha)। অভিযোগ, সেই সালিশি সভায় বাচ্চাকে আনতে গেলে তার পিসি ও ঠাকুমাকে লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। এই ঘটনা ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় মালদহের চাঁচল থানার নূরগঞ্জে। আহত দুই মহিলা হাসপাতালে ভর্তি।
শিশু কার কাছে থাকবে এই নিয়ে বিবাদ। তা মেটাতেই গ্রামে বসেছিল সালিশি সভা। অভিযোগ, ওই শিশুকে আনতে গেলে শিশুর পিসি ও ঠাকুমার উপর চড়াও হয়ে লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। অভিযোগ তৃণমূলের নেতা এই ঘটনা ঘটান। তিনি আবার পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামীও। এরপরই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী ইউসুফ আলির বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ওই দম্পতির মধ্যে একেবারে ভাব ছিল না। রবিবারও খুব অশান্তি হয়। এরপরই বাড়ির ছেলে ও ছেলে বউয়ের ঝামেলার জন্য বাড়ির কর্ত্রী ও মেয়ে নিজেদের কাছে ওই শিশুকে রেখে দেবেন বলেন। আর এই শিশু সন্তানকে রাখা নিয়েই পরে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। যা মেটাতে গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। অভিযোগ, এদিকে সেখানে মোড়লের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তৃণমূলের ইউসুফ আলি।
সালিশি সভায় ঝামেলার কোনও সমাধান না হওয়ায় শিশুটিকে আনতে যান শিশুর ঠাকুমা বেগম বিবি ও পিসি মালেকা খাতুন। অভিযোগ, এরপরই তাঁদের রড, লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। দুই মহিলার চিৎকারে শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপরই চাঁচল থানায় ইউসুফ আলি-সহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী ইউসুফ আলি। অন্যদিকে লিখিত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে চাঁচল থানার পুলিশ। এদিকে এরকম একটি বিষয়ে শাসকদলের নাম জড়ানোয় নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বেড়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। এ বিষয়ে চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, অন্যায় করলে সে যেই হোক রেহাই নেই। অন্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল কোনও আপোস করবে না। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী এমন ঘটনায় জড়িত থাকলে দলের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউসুফ আলির বক্তব্য, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল। স্বামী বউকে মেরেছিল। এই নিয়ে গোলমাল। আমি ওখানে যাইওনি। কিছু জানিও না। আমার উপর আক্রোশ থেকে এসব বলছে। এসব বললেই তো হল না। ওখানে তো আরও লোকজন ছিল। তারা তো দেখেছে সব। তারা বলুক। এর পর আইন আইনের পথে চলবে।”
আরও পড়ুন: কুর্নিশ! বাবার অসুখ, সংসার চালাতে অ্যাম্বুল্যান্সের স্টিয়ারিং হাতে তুলে নিল মেয়ে