ফুডপার্কের সরকারি জমি বেহাত হয়ে আজ ভাগাড়! নথিই খুঁজে পাচ্ছে না কৃষি দফতর

Food Park Land: ২০০৭ সালে অনেক স্বপ্ন, কর্মসংস্থানের অনেক সম্ভাবনা নিয়ে তৈরি এই ফুড পার্ক এখন জঙ্গলাকীর্ণ ভাগাড়! এমনকি সম্প্রতি পুলিশ সুপারের অস্থায়ী অফিসও গড়ে উঠেছে ফুড পার্কের এই জমিতে।

ফুডপার্কের সরকারি জমি বেহাত হয়ে আজ ভাগাড়! নথিই খুঁজে পাচ্ছে না কৃষি দফতর
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 24, 2021 | 10:37 PM

মালদহ: তখন বাম আমল। মালদহে ৩৮ একর জমির ওপর একটি ফুড পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেয় সরকার। প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করা হয় কৃষি দফতর থেকে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের তরফে ২০০৭ সালে রাজ্য-কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করে তৈরি হয় শিল্প তালুক। সেই জমি এখন বেহাত হয়ে উঠেছে জমি মাফিয়াদের হাতে। গোপনে বিক্রি হচ্ছে একের পর এক প্লট।

ফুড পার্ক থেকেও উধাও প্রায় ৩৫ একর জমি! এভাবেই সরকারি জমি ধীরে ধীরে বেহাত হচ্ছে মালদার কোথাও জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে গোপনে, কোথাও স্রেফ গায়ের জোরেই। কারখানা গড়ার নামে সরকারের জমি এখন জমি মাফিয়াদের হাতে। হয়ে উঠেছে সমাজ বিরোধীদের আস্তানা! মোট ৩৫টি প্লট ছিল এখানে। ৪ টি শেড, প্যাক হাউস, স্টোর রুম, মিনি কোল্ড স্টোরেজ ইত্যাদি তৈরি হয়। কয়েকজন শিল্পপতি ২৫ টি প্লট ও ২ টি শেড এলাকা রাজ্যের কাছ থেকে গ্রহণ করে। বাকি গুলো ফাঁকাই পড়ে থাকে।

সেই একরের পর একর জমি এখন জঙ্গল-আগাছায় ভরা। ফুড পার্ক তৈরির জন্য নেওয়া জমি সরকারি উদাসীনতায় বেদখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল মালদহে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই জায়গা এখন সমাজ বিরোধীদের আস্তানা। আবার সেখানেই সিমেন্ট বালি রেখে চলছে সিন্ডিকেটের ব্যবসাও। এখানেই শেষ নয়। এমনকি ইংরেজবাজার পুরসভাও বিস্তীর্ণ জায়গা দখল করে জুড়ে ভাগাড় বানিয়ে ফেলেছে। জড়িত কে?

এই সরকারি সম্পত্তি বেদখলের পিছনে যে তথ্যগুলি উঠে আসছে, তার মধ্যে চাঞ্চল্যকর হল সরকারি ফাইলই উধাও হয়ে গিয়েছে! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এগ্রিকালচার দফতরের আধিকারিকদের অভিযোগ, গোপনে জমি বিক্রি করা হচ্ছে। এবং সেই জমি এখন সমাজ বিরোধী, সিন্ডিকেট ও জমি মাফিয়াদের কবজায় চলে গিয়েছে।

এখন চারিদিকে জঙ্গলের পরিবেশ। নষ্ট হচ্ছে সরকারি সমস্ত পরিকাঠামো। স্থানীয়দের কথায়, জমিগুলো বেসরকারি ভাবে দালালদের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু কারা কিনছে জানি না। এক স্থানীয় হোটেল মালিকের কথায়, লিজের জমি তো হস্তান্তর করা যায় না। আমরা সাধারণ উদ্যোগপতিরা তাই হোটেল করলাম। অন্যদিকে শহরের যাবতীয় নোংরা এখন ডাঁই করে পুরসভা ফেলে যাচ্ছে এই না হওয়া শিল্প তালুকে।

২০০৭ সালে অনেক স্বপ্ন, কর্মসংস্থানের অনেক সম্ভাবনা নিয়ে তৈরি এই ফুড পার্ক এখন জঙ্গলাকীর্ণ ভাগাড়! এমনকি সম্প্রতি পুলিশ সুপারের অস্থায়ী অফিসও গড়ে উঠেছে ফুড পার্কের এই জমিতে।

জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর তমাল সরকারের কথায়, কীভাবে হয়েছে জানি না। কোনও নথি পাওয়া যাচ্ছে না। আঙুল তুলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধেও। অন্যদিকে জেলা কৃষি দফতরের প্রিন্সিপালের কথায়, ফুড পার্ক কোথায় আছে সেটাই জানি না! কীভাবে হয়েছে, কেন হয়েছে, সে সব প্রশ্নের মধ্যে স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশ সুপারের অফিস হওয়ায় সমাজ বিরোধীদের দৌরাত্ম অন্তত কিছুটা হলেও কমেছে। এটাই পাওনা। আরও পড়ুন: ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশদ্বার উত্তরবঙ্গ! দাবি চিকিত্‍সকদের, তথ্য গোপন স্বাস্থ্যদফতরের?