মালদা: কালিয়াচক-কাণ্ডের সেই হত্যাপুরীর রহস্য এখনও অধরা। এখনও তদন্তে নেমে একের পর এক জট ছাড়াচ্ছেন গোয়েন্দারা। গত ১৭ জুন ষোলোমাইলে নিজের মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে খুন (Murder) করার অভিযোগে ১৮ বছরের আসিফ মহম্মদকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। টেকস্যাভি আসিফের পর্দাফাঁস করতে একের পর এক পদক্ষেপ করেছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার, আসিফের মৃত মা-বাবার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পেল পুলিশ। আর তাতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আসিফের মা-বাবার পোস্টমর্টেম (Post Mortem) রিপোর্ট বলছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি খুনের সময়ে আসিফের সঙ্গে তার মা-বাবার ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। প্রাণে বাঁচতে অচৈতন্য অবস্থাতেই ছেলের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ সংঘর্ষ হয়। কিন্তু যুঝতে পারেননি। ওই সময়েই আসিফ নিজের মা-বাবাকে গলা টিপে খুন করে। তার মা-বাবার গলায় শ্বাসরোধ করে খুন করার চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে কেন আসিফ এই তথ্য়টি লুকিয়েছিল? যতবারই আসিফকে জেরা করা হয়েছে, খুনের ঘটনার বর্ণনা দিতে বলা হয়েছে প্রতিবারই আসিফ জানিয়েছে, ওইদিন, মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে ঠাণ্ডা পানীয়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচৈতন্য করে দেয়। তারপর, বাড়ির সংলগ্ন গুদামঘরে চৌবাচ্চায় চুবিয়ে রেখে সেখানেই পাশে মাটি খুঁড়ে প্রায় জ্যান্ত মাটিতে পুঁতে দেয়। চুন, বালি, সুড়কি দিয়ে গেঁথে দেয় মেঝেও। কিন্তু শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা একবারও স্বীকার করেনি আসিফ। কেন এই তথ্য়টি আসিফ এড়িয়ে যায়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই আসিফ এই কাজ করেছিল কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই কারণেই ফের আসিফকে জেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে খুন করে নিজের বাড়ির গুদামেই মাটিতে পুঁতে দেয় ধৃত ১৮ বছরের যুবক আসিফ মহম্মদ। গত শুক্রবার দাদা আরিফের অভিযোগের ভিত্তিতে আসিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা দেখেন শুধু খুন নয়, একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত আসিফ। ঘটনায়, আগেই আসিফের মামা শিস মহম্মদ, দাদা আরিফ মহম্মদ ও কাকা মর্তুজা আলীকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। যদিও, খুনের ব্যাপারে আসিফের মামা ও কাকা কিছুই জানতেন না বলে গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Malda Murder: আসিফের ‘কুকীর্তির’ খবর রাখতেন কাকা, তবুও চুপ কেন? তদন্তে গোয়েন্দারা