‘তৃণমূল নেতারা এসে টাকা-চাকরি দেবে বলেছিল’, লকডাউনের ভয়ে ঘরে ফিরে বলছেন রোজগারহীন পরিযায়ী শ্রমিকরা

মালদার বহু পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন মুম্বইতে (Mumbai)। লকডাউনের (Lockdown) ভয়ে তড়িঘড়ি ঘরে ফিরলেও খাবার জুটছে না তাঁদের।

'তৃণমূল নেতারা এসে টাকা-চাকরি দেবে বলেছিল', লকডাউনের ভয়ে ঘরে ফিরে বলছেন রোজগারহীন পরিযায়ী শ্রমিকরা
ফিরে এসেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা
Follow Us:
| Updated on: Apr 20, 2021 | 1:49 PM

মালদা: বছর ঘুরে ফের ফিরে আসছে খারাপ দিনগুলো। শুধু ভাইরাস নয়, ভয় আরও অনেক বেশি। ভয় খিদের, ভয় আশ্রয় হারানোর। গত বছর লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের যে সব ছবি চোখে পড়েছিল তার মুখোমুখি যাতে আর না হতে হয়, তার জন্য ভিন রাজ্য থেকে তড়িঘড়ি ফিরে আসছেন শ্রমিকরা। মুম্বইতে কাজ করেন মালদার বহু শ্রমিক। এখানে তো তাদের রোজগার নেই। এখনই কাজ জুটে যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। আর স্থানীয় নেতাদের মুখে শুধুই আশ্বাস। তাই আপাতত তাঁদের অবস্থা খুবই অসহায়।

নতুন করে লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ভিনরাজ্য বিশেষ করে মুম্বই থেকে দলে দলে নিজের গ্রামে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সবথেকে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক যান এই জেলা থেকে। বহু গ্রাম রয়েছে যেখানে পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য ভিন রাজ্যে কাজ করতে যায়। নতুন করে করোনা, নাইট কার্ফু, লকডাউন এসবের জন্যে আতঙ্কিত পরিয়ায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসছেন ঘরে। অথচ নেই রোজগার। তাঁদের বক্তব্য এখানে ফিরে আসা আত্মহত্যার সামিল। কাজ নেই,কারখানা নেই। রোজগারের কোনও উপায় নেই। তবুও ফিরে আসতে হচ্ছে।

মুম্বইয়ে যারা রয়েছে তাঁরা প্রায় সকলেই ফিরে আসছে। ওদের কাছে করোনার থেকেও বেশি ভয় পুলিশের। নাইট কার্ফু শুরু হওয়ায় সেই আতঙ্ক বেড়েছে।

মালদার কালিয়াচক, সুজাপুর, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, সামসি ইত্যাদি বিভিন্ন এলাকা থেকেই বহু পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজে যান। ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যুও হয় দুর্ঘটনায়। শুধুমাত্র মালদায় গত একবছরের মধ্যে এ ভাবে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ২৪ জন। তবুও প্রান হাতে করে বিনা প্রশিক্ষণেই বিপজ্জনক কাজ করতে বেরিয়ে পড়ে কিশোর থেকে যুবকরা।

বহু পরিযায়ী শ্রমিক নাবালকও থাকে। কালিয়াচকের দুলালগঞ্জে একসঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল সাতজনের। তবুও এই গ্রামে ঘরে ঘরে  সব পুরুষই ভিন রাজ্যে কাজ করতে যায়। তাদের অভিযোগ, এই রাজ্যের কাজ নেই বলেই বাইরে যেতে হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রমজান মাস। সামনে ঈদ। তাতেও জুটছে না খাবার। তাঁদের বক্তব্য, এই রাজ্য থেকে সবাই রোজগারের জন্যে  যায় গুজরাট, দিল্লি কিংবা মুম্বই।

আরও পড়ুন: করোনা কড়চা: বাতিল হয়ে গেল আইসিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষা

তাঁদের আরও অভিযোগ, এখানে তৃণমূলের সব নেতারা ভোটের সময় এসে শুধু বলে এই দেব সেই দেব। কিন্তু পরে আর দেখা মেলে না। কাঁদতে কাঁদতে এক মহিলার অভিযোগ, ‘আমার একমাত্র ছেলে মারা গিয়েছে কাজে গিয়ে। সাবিনা ইয়াসমিন, কৃষ্ণেন্দু দেখতে এসে কত কিছু বলল চাকরি হবে, টাকা দেবে। কিন্তু মমতার সরকার কিচ্ছু দেয় নি। স্বামী প্রতিবন্ধী। কোনক্রমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে।’