TMC: অবশেষে বাতিল হয়ে গেল ফিরহাদের সভা, নেপথ্যে কি গোষ্ঠীকোন্দল?

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Oct 23, 2021 | 4:30 PM

Firhad Hakim: দলের অন্দরের খবর, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও মালদার অন্যতম প্রভাবশালী নেতা কৃষেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর সম্পর্কে বেশ 'শীতল'।

TMC: অবশেষে বাতিল হয়ে গেল ফিরহাদের সভা, নেপথ্যে কি গোষ্ঠীকোন্দল?
বাতিল ফিরহাদের সভা, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

মালদা:  অবশেষে বাতিল হয়ে গেল রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) সভা। আগামিকাল রবিবার মালদায় ফিরহাদের সভা হওয়ার কথা ছিল। তবে শনিবারের বারবেলায় তৃণমূলরে তরফে জানানো হয়েছে সেই সভা বাতিল হয়েছে। সভা বাতিলের কারণ হিসেবে মূলত হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডজনিত সমস্যার কথা বললেও দলের অন্দরের গোষ্ঠীকোন্দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিক্ষোভকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

দলের অন্দরের খবর, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও মালদার অন্যতম প্রভাবশালী নেতা কৃষেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর সম্পর্কে বেশ ‘শীতল’। শুধু তাই নয়, চাঁচলের বিধায়কের সঙ্গেও প্রাক্তন মন্ত্রীর সম্পর্ক বিশেষ ভাল নয়। কিছুদিন আগেই তৃণমূল বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর আচমকা, কৃষেন্দুর নিরাপত্তাও সরিয়ে নেয় রাজ্য প্রশাসন। নির্বাচন আবহে যা নিয়ে বিস্তর জল্পনা দেখা দেয়।

সমস্যার শেষ এখানেই নয়। শুধু বিধায়ক বা প্রাক্তন মন্ত্রীর মধ্য়েই বিবাদ এমনটা নয়, গোটা মালদা জুড়েই তৃণমূলে নেতাদের নিজেদের মধ্যে বিস্তর গোলযোগ রয়েছে। কখনও তা ব্লক প্রশাসনে কখনও বা পঞ্চায়েতে। কিছুদিন আগেই কালিয়াচকে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে দলেরই বিজয়মিছিলে গুলি চলেছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার। পাশাপাশি হরিশচন্দ্রপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল অবিদিত নয়। নির্বাচনের অনতিপরেই মালদা জেলা পরিষদেও দলের অন্দরের কোন্দল সামনে এসেছিল।  একুশের নির্বাচনে মালদায় তৃণমূল ভাল ফল করলেও ভিত যথেষ্ট নড়বড়ে বলেই স্বীকার করেছেন দলেরই একাংশ। প্রকাশ্যে এ বিষয়ে মুখ না খুললেও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন সেই কথা।

এরইমধ্যে, শনিবারই ফিরহাদের সভায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের কাছে কার্যত ‘ঘাড়ধাক্কা’ খেয়েছেন তৃণমূল নেতারা। ভায় উপস্থিত থাকার জন্য গ্রামবাসীদের আবেদন করতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। আর তাতেই বিপত্তি!  প্রায় ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে গ্রাম থেকে তৃণমূল নেতাদের বের করে দিলেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, নেতারা কেবল ভোট  নিতে, সভা করতেই আসেন। কাজের সময় তাঁদের আর পাওয়া যায় না। ঘটনাটি হরিশচন্দ্রপুরের গোলামোড় নবগ্রামের ঘটনা।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শনিবার সকালে, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এসে তাঁদের জানান, রবিবার ফিরহাদ হাকিমের সভায় যেতে হবে। সেখানে গেলেই তাঁদের যাবতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। এরপরেই ক্ষেপে ওঠেন এলাকাবাসী। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, কোনওভাবেই ফিরহাদের সভায় যাবেন না তাঁরা। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, ২০ বছর ধরে তাঁদের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। থাকার জন্য় ঘরটাও জোটেনি। প্রতিবারই ভোট আসে আর প্রতিবার নেতারা এসে নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই এ বার থেকে তাঁরা আর কোনও নেতার সভায় যাবেন না। এদিন তৃণমূল নেতারা এলে কার্যত তাঁদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন সকলে। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা।

যদিও, তৃণমূল নেতা আফসার আলি জানিয়েছেন, এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার। গ্রামে অনেকেই সকবরকম সুবিধা পেয়ে থাকেন। অনেকেই কিছুই পান না। এই পরিস্থিতিতে, অনেক গ্রামবাসীই অভিযোগ করেছেন তাঁরা সরকারি আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু, যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে তাঁদের যাতে দ্রুত ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় তার জন্য যুদ্ধকালীন তত্‍পরতায় কাজ চলছে। প্রতিবারই গ্রামবাসীদের সভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়। এ বারেও নিয়ম মেনেই বলা হয়েছিল। কিন্তু, গ্রামবাসীরা এমন বিক্ষোভ দেখাবেন তা বোঝা যায়নি। কার্যত, রাজ্যের মন্ত্রীর সভার আগেই এ ধরনের ঘটনায় কিছুটা অস্বস্তিতেই শাসক দল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে ভেবেই তাই সভা মুলতুবির সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: Post Poll Violence: মামলা দায়ের করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমডাঙায় ‘স্পট ভিজিট’-এ সিবিআই

Next Article