মালদা: নির্মম অত্যাচারের সাক্ষী থাকল মালদা (Malda)। গর্ভবতী মহিলাকে মাটিতে ফেলে তাঁর পেটে মারা হল লাথি। এখানেই শেষ নয় অত্যাচার! মহিলার শাশুড়িকে বিবস্ত্র করে চলল মার। আর এই সব অভিযোগ উঠছে স্থানীয় তিন তৃণমূল নেতা ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Malda Hospital) ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। গ্রামের মোড়ল মাতব্বরদের সালিসি করার চেষ্টা হলে উলটে অভিযুক্তদেরই পক্ষ নিয়েছে তাঁরা।
ঘটনাস্থান মালদার গাজোলের আলালের মুড়িয়াকুণ্ডু গ্রাম। এই গ্রামের পাশ থেকে চলে গিয়েছে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর এই রাস্তা হওয়ার পর থেকেই প্রত্যন্ত গ্রামের জাতীয় সড়ক লাগোয়া জায়গার দাম জমি মাফিয়াদের দৌলতে আকাশ ছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। বহিরাগত প্রমোটার,ঠিকাদার, জমি মাফিয়াদের ভিড় লেগেই থাকে এই সকল গ্রামগুলিতে। পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে থাকে স্থানীয় বা জেলা স্তরের শাসক দলের নেতা কর্মীরা এমনটাই অভিযোগ।
এই গ্রামেই দীর্ঘদিন ধরে বাস করেন এক যুবক। জাতীয় সড়ক লাগোয়া জমিতে তাঁর একটি ছোটো কম্পিউটারের দোকান রয়েছে পাশাপাশি রয়েছে তাঁর বাড়ি। এবার সেই দিকেই নজর জমির মাফিয়াদের। তাঁদের দখলে থাকা বিস্তীর্ণ এলাকার মাঝখানে ওই ব্যক্তির দোকান,বসত ভিটে হওয়ায় তাঁদের জমি প্লট করে ব্যবসা করতে সমস্যা হচ্ছে। এরপরই জমি মাফিয়া তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীরা অন্যত্র সরে যেতে বলে কিছু টাকার বিনিময়ে। কিন্তু রাজি না হওয়ায় তাঁর ওপর হামলা চলে।এরপরে ওই ব্যক্তি পুলিশে অভিযোগ জানায়। এতে লাভের লাভ কিছু তো হলোই না, উলটে বাড়তে থাকল হুমকির মাত্রা ।
গত মাসের ২৮ তারিখ রাতে বাড়িতে ছিলেন না ব্যক্তি। ঘরে ছিলেন বিধবা মা এবং একুশ বছরের স্ত্রী । অভিযোগ সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা কামরুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, আহাসানুল ইসলাম এবং করিমুল ইসলাম সহ আরও কয়েকজন অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় তাঁদের উপর। জোর করে জমির দলিল চায়। জমি বিক্রি করানোর জন্যে সই করাতে চাপ দিতে থাকে। অভিযোগ,ব্যক্তির মা রাজি না হলে তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়। গর্ভবতী স্ত্রী বাধা দিতে এলে তাঁকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারে দুস্কৃতীরা। এরপর বাইরে নিসাদের দোকানে তালা মেরে চলে যায় তাঁদের গ্রামছাড়া করার হুমকি দিয়ে। পরে ব্যক্তি এসে তাঁদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল পরে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। গাজোল থানায় অভিযোগ জানিয়েও কেউ গ্রেফতার হয়নি। উল্টে নিজেরাই এখন মালদা শহরে হাসপাতাল চত্বরে রয়েছেন।আতঙ্কে ঢুকতে পারছেন না গ্রামে।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: আগুনছোঁয়া পেট্রোলের দাম, কীভাবে কমানো সম্ভব জ্বালানি-জ্বালা? বাতলে দিলেন দিলীপ ঘোষ