মালদা: বিহারে করোনায় মৃতদের ‘লাশ’ গঙ্গায় ভেসে মালদায় ঢুকতে পারে। আগেই মালদা (Maldah) প্রশাসনকে সতর্ক করেছিল নবান্ন (Nabanna)। এবার শুরু হল নাকা চেকিং। মালদার মানিকচক ও পঞ্চানন্দপুর গঙ্গার ঘাটে চলছে কড়া নজরদারি। তৈরি করা হল অ্যাকশন প্ল্যানও।
রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে মালদহ জেলাকে এই মর্মে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালদাই রাজ্যে গঙ্গার এন্ট্রি পয়েন্ট। অন্যান্য যেসব জেলার উপর দিয়ে গঙ্গা বয়ে গিয়েছে সেই সব জেলাকেও সতর্ক করা হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসনের পরিকল্পনা গঙ্গায় কোনও মৃতদেহ ঝাড়খণ্ড থেকে ভেসে আসছে কিনা তা খুঁজে বের করতে। ডিএম, এসপি, সিএমওএইচকে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। নৌকো, জাল ও বাঁশ নিয়ে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
গঙ্গা দিয়ে রাজ্যে ওই সব শবদেহ ঢোকার প্রথম পয়েন্ট হল মালদার মানিকচক ঘাট। ওই এলাকায় গঙ্গা প্রায় ১ কিলোমিটার চওড়া। ফলে কড়া নজর রাখতে হবে।
মালদহের সব বিডিওকে বলা হয়েছে, নদীর ধারে কোনও জায়গা খুঁজে রাখতে যাতে সেখানে লাশ সমাধিস্থ করা যায়।মানিকচক ঘাট থেকে ফরাক্কা ব্যারেজ ২২ কিলোমিটার নীচে। তাই ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকেও এ নিয়ে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছে। দেহ লকগেট পার করে চলে না যায়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
গঙ্গা লাগোয়া জেলার সব থানাকে এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কোনও মৃতদেহ দেখা গেলে তা তুলে নেওয়া হয়। মালদার জেলা শাসকের কাছ থেকে এ সব কাজের জন্য কোনও তহবিল চাওয়া হলে তা যাতে দেওয়া হয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মালদা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই গঙ্গা তীরবর্তী সংশ্লিষ্ট ব্লক আধিকারিকদের নজরদারির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত মানিকচক, কালিয়াচক ২ ও ৩ নম্বর ব্লক আধিকারিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই এলাকার নদী তীরবর্তী স্থানগুলিতে ১০-১২টি নৌকার মাধ্যমে নজরদারি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীতে যাঁরা মাছ ধরতে যান ও নৌকা পারাপার করান, তাদেরকে জানানো হয়েছে গঙ্গায় যদি কোন মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায় তৎক্ষণাৎ যেন সংশ্লিষ্ট থানা বা ব্লক দফতরে খবর দেওয়া হয়।
বিহারের বক্সার ও উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে গঙ্গায় শয়ে শয়ে লাশ ভাসতে দেখা যাচ্ছে। ওইসব শবদেহ করোনা রোগীদের বলেই এখনও পর্যন্ত অনুমান করা হচ্ছে। তবে তদন্তে তা এখনও প্রমাণ হয়নি। কিন্তু বিহার ও উত্তরপ্রদেশে গঙ্গায় ভাসতে থাকা মৃতদেহ মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও। পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি অ্য়াকশন প্ল্যান তৈরি করেছে রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: বাড়ির সামনেই রাস্তায় ফেলা চাদরে ঢাকা করোনা রোগীর দেহ! প্রহর গুনছেন প্রতিবেশীরা
যদিও দীর্ঘদিন ধরে নদীর সঙ্গে থাকা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষদের বক্তব্য, এভাবে উত্তর প্রদেশ, বিহার থেকে মৃতদেহ ভেসে আসার কোনো সম্ভাবনাই নেই।এখন নদীর সেই স্রোত নেই। মৃতদেহ ভেসে এলেও তা ঝাড়খণ্ডের দিকেই থেকে যাবে। এ রাজ্যে আসবে না।