মালদা: কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় পরিবারে ছিল তীব্র অশান্তি। সঙ্গে রাতের খাবার নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বচসা। এই দুই ঘটনার জেরে নিজের মেয়েকে জলে ডুবিয়ে খুন (Murder) করল মা। হাড় হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের (Malda) চাঁচল থানার অনুপনগর গ্রামে। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। খুনে অভিযুক্ত মা ও দুই মেয়ের ঠাকুমাকে গ্রেফতার করেছে চাঁচল থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ওই দুই মেয়ের নাম মাধুরী মণ্ডল (১০) জয়শ্রী মণ্ডল (৮)। চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুপনগর গ্রামের বাসিন্দা ছিল তারা। অভিযুক্ত মায়ের নাম মাম্পি মণ্ডল (৩৫)।
ঘটনার পর মাধুরী ও জয়শ্রীর বাবা চঞ্চল মণ্ডল জানান, শনিবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার নিয়ে তুমুল বচসা হয় স্ত্রী’র সঙ্গে। এরপর যে যার মত রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। বড় মেয়ে মাধুরী সকালে তাঁর পাশেই ঘুমিয়েছিল। কিন্তু সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ তিনি জানতে পারেন, দুই মেয়ে পুকুরের জলে ডুবে গেছে। তড়িঘড়ি করে বাড়ি থেকে ছুটে গিয়ে দেখতে পান, একটি পুকুরের মধ্যে তাঁর দুই মেয়ের মৃতদেহ ভাসছে। আর বেশ কিছু গ্রামবাসী স্ত্রী মাম্পিক আটক করে রেখেছে। সেখানে পৌঁছেই তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী-ই নিজের দুই মেয়েকে পুকুরের জলে ডুবিয়ে খুন করেছে।
চঞ্চলের আরও দাবি, তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। যার জেরে হয়ত এই ঘটনা সে ঘটিয়েছে। অন্যদিকে দাবি উঠছে, কন্যাসন্তান থাকায় বারবার মাম্পির সঙ্গে অশান্তি করতেন চঞ্চলেন মা। বউকে তিনি মানসিক চাপ দিতেন বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে পুলিস-কৃষক খণ্ডযুদ্ধ, রণক্ষেত্র কার্নাল
ঘটনার পরেই খবর দেওয়া হয় চাঁচল থানায়। পুলিস চঞ্চলের স্ত্রী মাম্পি মণ্ডলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থলে এসে পুকুর থেকে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে প্রথমে মালতিপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠায় পুলিস। এদিকে এলাকায় যাতে কোনও রকম উত্তেজনা যেন না ছড়ায় সেই জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিস বাহিনী। ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন চাঁচল মহকুমা পুলিস আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল ও চাঁচল থানার আধিকারিক সুকুমার ঘোষ।
আরও পড়ুন: ‘কে কার হাত ভাঙে দেখা যাবে’, কল্যাণকে পাল্টা নিশানা ‘বাহুবলী’ অর্জুনের