বহরমপুর: রাজ্য-রাজনীতিতে মমতা-অধীর বিবাদ সকলের জানা। জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হয়েছে ঠিকই। বঙ্গে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। কারণ ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বহরমপুর দখলে এবার সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে। তবে এতেও যে পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী দমানো যাবে না সে কথা সদর্পে নিজেই জানালেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসকে কার্যত খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, “বহরমপুরে তৃণমূল জিতলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
বস্তুত, একদা বামেদের বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন অধীর চৌধুরী। এখন যদিও সে চিত্র বদলেছে। তবে তৃণমূল জমানাতেও কার্যত একরোখা তিনি। বাংলায় তৃণমূল সরকার গঠনের পর প্রথম লোকসভা ভোটে বহরমপুরে সাড়ে তিন লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন তিনি। এরপর অধীরকে পরাস্ত করতে কান্দির তৎকালীন বিধায়ক অপূর্ব সরকার তথা ডেভিড প্রার্থী হন তাঁর বিরুদ্ধে। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ হাসি হাসেন অধীর চৌধুরী।
২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও এই অধীরকেই হারাতে মরিয়া তৃণমূল। প্রার্থী করেছে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে। অধীর গড়ে সংখ্যালঘু ভোট টানতে মরিয়া তারা। শুধু তাই নয়, জনপ্রিয় একজন ক্রিকেটারকে দাঁড় করিয়ে তাঁর ‘ইমেজের’ উপরই ভোট বৈতরণী পাড় করতে চাইছে শাসকদল। অপরদিকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন নির্মল সাহা। অনেকেই মনে করছেন সংখ্যালঘু ভোট যদি কাটাকাটি হয় তাহলে সুবিধা পেতে পারেন নির্মল।
১৯৯৯ সালের পর থেকে এই কেন্দ্রে টানা সাংসদ রয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৫.৪৩ শতাংশ ভোট। তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৯.২৩ শতাংশ ভোট। আবার ২০২১ বিধানসভা ভোটের ফল বিচার করলে দেখা যাচ্ছে বিজেপির সুব্রত মৈত্র তৎকালীন নির্বাচনে সেই সময় অধীর গড়ে মাত দিয়েছিলেন কংগ্রেসের নাড়ু গোপাল মুখোপাধ্যায়কে। ফলে লড়াই যে অধীরের জন্য খুব একটা সহজ হবে না সে কথা মনে করছে রাজনৈতিক কারবারিরা। কিন্তু এইসবের পরও আত্মবিশ্বাসী অধীর সাফ জানিয়েছেন, “আমার দু’টো কথা। বহরমপুর লোকসভা আসনে তৃণমূল হেরে গেলে সেই হার মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় নিজের পরাজয় বলে মেনে নেবেন কি? হ্যাঁ বা না-তে বলুন। আর দুই, বহরমপুরে যদি তৃণমূল জিতে যায়, তাহলে রাজনীতি থেকেই অবসর নিয়ে নেব।”