মুর্শিদাবাদ: লোকে লোকারণ্য ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) ক্যাম্প। বাঁশের ব্যারিকেড টপকে শিবিরে যেতে গিয়ে গলগঘর্ম পঞ্চায়েত কর্মী বিনন্দ মাহাতো। তাঁকে ওই ভাবে দেখে আচমকাই সপাটে চড় বিডিও-র! ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল ওই পঞ্চায়েত কর্মী। প্রতিবাদে কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে গেল ‘দুয়ারে সরকার’-এর কাজ। সোমবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, এদিন মুর্শিদাবাদের রানিনগরের কাতলামারী ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জুনিয়র বেসিক স্কুল চত্বরে দুয়ারে সরকার শিবিরে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। যাঁদের বেশিরভাগই লাইনে দাঁড়িয়েছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার আশায়। সবাই ঘেয়ে নেয়ে একশা। এর মধ্যেই বিডিও সাহেবের রণংদেহী রূপ দেখে চমকে গেলেন সবাই। এক পঞ্চায়েত কর্মীকে বিনা কারণেই সপাটে চড় কষিয়ে তিনি ঠেলে দেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় শোরগোল। স্থানীয়রা বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দেন অন্য পঞ্চায়েত কর্মীরা।
কিন্তু কেন এমন হল? জানা গিয়েছে, এদিন সকালের দিকে রানিনগর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী দুয়ারে সরকার শিবিরে আসেন। খতিয়ে দেখছিলেন কাজকর্ম। সেখানে হঠাৎই তিনি দেখতে পান বাঁশের ব্যারিকেড ডিঙিয়ে একজন শিবিরের দিকে ছুটে আসছেন। তিনি যখন শিবির পৌঁছতে যাবেন ঠিক তখনই তাঁর পথ আগলে দাঁড়ান বিডিও সাহেব। ওই ব্যক্তিকে ঠেলা দেওয়া হয়, এমনকি তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারা হয় বলে অভিযোগ। পরে জানা যায় দিয়ে তিনি একজন পঞ্চায়েত কর্মী। দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছনোর চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় তাঁকে ধাক্কা দিয়েছেন বিডিও।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিডিও-কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। তাঁর গাড়ির চালকের কাছ থেকে গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে কাজ বন্ধ করে দেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ডোমকলের এসডিপিও, রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহ আলম সরকার-সহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা।
এই ঘটনার প্রতিবাদে দুঘন্টা কাজ বন্ধ থাকে। রানীনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চায়েত কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার নিন্দা করেন। যদিও, তিনি বিডিওর প্রকাশ্যে চড় মারার কথা অস্বীকার করেছেন। এদিকে ওই কর্মী কান্না ভেজা চোখে বলেন তাঁকে মারা হয়েছে, ঠেলেছেন বিডিও সাহেব। তিনি শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে শিবিরে পৌঁছচ্ছিলেন। কেন তাঁকে মারধর করা হল তিনি জানেন না। তবে পরে তাঁরা সবাই কাজে যোগ দেন। এদিকে এই পুরো ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি রানিনগর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তীর। আরও পড়ুন: ‘৪৯৮ ধারার অপব্যবহারে আমরা বিপন্ন,’ প্রশাসনের দ্বারস্থ হল পুরুষ সংগঠন!