চুন খসলেই মামলার ভয় দেখান মহিলারা, বিপন্ন পুরুষ! বিচার চেয়ে সরব পুরুষ সংগঠন

498: গার্হস্থ্য হিংসার আইনের অপব্যবহার করে পুরুষদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। মিথ্য়া মামলায় জড়িয়ে সমাজে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। এমনই সব অভিযোগ এনে বীরভূম জেলাশাসকের দ্বারস্থ হল পুরুষ সংগঠন।

চুন খসলেই মামলার ভয় দেখান মহিলারা, বিপন্ন পুরুষ! বিচার চেয়ে সরব পুরুষ সংগঠন
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 5:16 PM

বীরভূম: গার্হস্থ্য হিংসার আইনের অপব্যবহার করে পুরুষদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। মিথ্য়া মামলায় জড়িয়ে সমাজে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। এমনই সব অভিযোগ এনে বীরভূম জেলাশাসকের দ্বারস্থ হল পুরুষ সংগঠন।

সংগঠনের অভিযোগ, বহু সামান্য, তুচ্ছ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহিলারা ৪৯৮ মামলার ভয় দেখান পুরুষদের। এবং অভিযোগকারিণীর অভিযোগের সত্যাসত্য বিচার না করেই সংশ্লিষ্ট পুরুষের বিরুদ্ধে গাহর্স্থ হিংসা সহ একাধিক গুরু দণ্ডে জর্জরিত করা হচ্ছে। অপব্যবহার হচ্ছে ৪৯৮ ধারার। যে কারণে প্রতিনিয়ত কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন পুরুষরা। অথচ সংবিধানের ধারা অনুযায়ী আইন সকলের জন্যই সমান। এমনই সব অভিযোগ করে সোমবার বীরভূম জেলা শাসক চত্বরে একটি ডেপুটেশন জমা দিলেন পুরুষ কল্যাণ পাবলিক চ্যারিটেবল ট্রাস্ট।

পুরুষ কল্যাণ পাবলিক চ্যারিটেবল ট্রাস্টের তরফে গৌতম সেন বলেন, “পুরুষদের ওপর মিথ্যা গাহর্স্থ হিংসা আইন, ২০০৫ এবং ৪৯৮ ধারা সহ বিভিন্ন যে ধারা রয়েছে সেগুলির যে অপব্যবহার হচ্ছে, তার সংশোধনের আর্জি প্রস্তাব নিয়ে আমরা অফিসারদের কাছে এসেছি। আমাদের বক্তব্য, এই সমাজ লিঙ্গ নিরপেক্ষ সমাজ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কিছু আইনের অপব্যবহার হচ্ছে, পুরুষদের জীবন ধ্বংস হচ্ছে, বহু পুরুষ সমাজে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের স্বপক্ষে কথা বলতে এসেছি। আমরা চাই না যে কোনও আইনের অপব্যবহার হোক। ডিআই রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে যে, কোনও প্রেসকাইব ফরম্যাট, কোনও টেমপ্লেট ব্যবহার না করে, শুধু অভিযোগকারিণীর অভিযোগটুকু কপি, পেস্ট করে তা জেলাশাসকের কাছে পেশ করা হচ্ছে। অনেকে এর ফলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসছেন। তার রায়-ও হচ্ছে আদালতে!”

সংগঠনের আর এক সদস্য কল্যাণ মুখার্জি বলেন, “পুরুষরা যে লাঞ্ছিত হচ্ছেন সমাজে, তারই প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। ৪৯৮ ধারার মামলায় প্রচণ্ডরকম ভাবে অপব্যহার হচ্ছে। কোনও তুচ্ছ ঘটনার প্রেক্ষিতেও কোনও মহিলা পুরুষকে ৪৯৮ ধারার জুজু দেখানো হচ্ছে। এবং তাদের এই আইনের অপব্যবহার করে জর্জরিত করে দেওয়া হচ্ছে। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের মতো মামলাতেও অনেকে জড়ানো হচ্ছে এবং মোটা অঙ্কের খোরপোশ দাবি করা হচ্ছে। তাই আমরা চাই লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন সমাজ যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবিধান যে সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। আমরা চাই লিঙ্গ নিরপেক্ষ সমাজ।”

উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় বিবাহিত কোনও মহিলা শ্বশুরবাড়িতে নিষ্ঠুরতার শিকার হলে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এমন কোনও আক্রমণাত্মক আচরণ যা ওই বিবাহিত মহিলাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয় অথবা তাঁর দেহে অথবা মনে মারাত্মক আঘাত সৃষ্টি করে। এছাড়া এই আচরণের আওতায় পড়ে মূল্যবান সম্পত্তি বা সামগ্রীর জন্য বধূ বা তাঁর কোনও আত্মীয়কে চাপ দেওয়ার মতো ঘটনাও। শ্বশুরবাড়ির দাবি অনুযায়ী, এই সব মূল্যবান সম্পত্তি বা সামগ্রী জোগাড় করতে অপারগ হলে বধূ বা তাঁর আত্মীয়দের প্রতি হেনস্থাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আদালতে অভিহিত হয়।

যদিও এমন গুরুত্বপূর্ণ আইনের অপব্যবহারের অভিযোগও বিস্তর পাওয়া গিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলে, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে মহিলাদের বিবাহ পরবর্তী নিষ্ঠুরতা থেকে সুরক্ষা দিতে ৪৯৮ এ ধারা রাখা হয়েছিল। কিন্তু অন্য পক্ষকে হেনস্থা করতে যে ভাবে তাকে হাতিয়ার করা হচ্ছে, তা যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। আরও পড়ুন: ‘আমরা আর দুয়ারে সরকারে কাজ করব না,’ বিডিও-র বিরাশি শিক্কার চড়ে চোখ ছলছল কর্মীর