মুর্শিদাবাদ: একদিন আগেই মুর্শিদাবাদে ভোট (Bengal Assembly Election) প্রচারে গিয়ে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘দরজা বন্ধ করে রেখেছি। খুলে দিলে বিজেপি দলটাই আর এ রাজ্যে থাকবে না।’ শুক্রবার সেই মুর্শিদাবাদে দাঁড়িয়েই অভিষেকের বক্তব্যের জবাব দিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (BJP MP Dilip Ghosh)। দিলীপের চাছাছোলা জবাব, ওরা বুঝে গিয়েছে এখানে বেশিদিন ‘দোকান’ চলবে না। তাই ত্রিপুরায় ছুটতে হচ্ছে।
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “এইসব ডায়ালগ অনেকদিন থেকে শুনছি। মানুষ সব বুঝে নিয়েছেন। মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওদের দর কতটা। যাঁর নামে সরকার চলে তাঁকেই তো আমরা হারিয়ে দিয়েছি। আমরা একবার হারিয়েছি, আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাব। এই দোকান বেশিদিন চলবে না, তাই ত্রিপুরায় দোকান খোলার চেষ্টা করছে তৃণমূল। কিন্তু ওদের যে ভাবে ইডি সিবিআই ডাকছে, কাকে কখন আটকে দেবে কে জানে!”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সামশেরগঞ্জে নির্বাচনী প্রচার সভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থনে এই সভা করেন তিনি। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি ছি, “দরজা বন্ধ করে রেখেছি আমরা। না হলে তো এ রাজ্য থেকে বিজেপি পার্টিটাই উঠে যেত।”
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। যেখানে তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে গেলে তাঁকে এই উপনির্বাচনে জিততেই হবে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের দুই বিধানসভা কেন্দ্র জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে সাধারণ নির্বাচন। এই দুই কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে বিধানসভা নির্বাচনই স্থগিত করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য একবার ভোট ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের দিনই ইদ পড়ে যাওয়ায় ফের নির্বাচন পিছিয়ে দেয় কমিশন। তাই ভবানীপুরে উপনির্বাচনের সঙ্গেই ওই দুই কেন্দ্রে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে।
ভবানীপুরের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে নাম না করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বলেন, “অকাল নির্বাচন করতে হচ্ছে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী পদে উনি থাকবেন বলে। এই করোনা পরিস্থিতিতে ভোট। সবসময় ভাব করেন সব কিছু বোঝেন উনি। লোকের সঙ্গে এখন নাটক করছেন। মান সম্মান থাকলে পদত্যাগ করতে পারেন তো।”
জোর টক্কর চলছে দুই ফুলে। একদিকে ঘাসফুল, অন্যদিকে পদ্মশিবির। দিনরাত এক করে প্রচার চালাচ্ছে দুই দলই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত নিজের প্রচারে নামছেন। ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারাও ঘুরে ঘুরে তাঁর হয়ে ভোট চাইছেন। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের জন্য রাতদিন ময়দানে দলের প্রথম সারির নেতারা। ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে সরগরম বাংলা। একটি মাত্র কেন্দ্রে উপনির্বাচন, তবু তা যে এতটা হাইভোল্টেজ হতে পারে, অতি সম্প্রতি এমন নমুনা কোনও রাজ্যে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: COVID-19 Vaccination: কেন্দ্র চাইলেও ‘দুয়ারে ভ্যাকসিনে’ সায় নেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের