
মুর্শিদাবাদ: ভিনরাজ্যে বাংলার মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে বিজেপিকে তোপ দেগেছেন। ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে এবার তাঁর পুরনো অভিজ্ঞতার কথা জানালেন প্রাক্তন সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকেও তোপ দাগলেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ায় তৃণমূল তাঁকে তখন কী বলেছিল, এদিন তা নিয়েও সরব হন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ।
অধীর বলেন, “ভিনরাজ্যে বাংলার মানুষকে হেনস্থার ঘটনা আজকের নয়। বিজেপি যেদিন থেকে ক্ষমতায় এসেছে, সেদিন থেকে এ রাজ্যের মানুষকে অন্য রাজ্যে বঞ্চনা ও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। এর কারণ, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এ রাজ্যের মানুষের ভাষা এক, সংস্কৃতি এক, খাদ্য এক, চেহারা এক। ফলে বাংলাদেশের মানুষ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে ফারাক করা কঠিন হয়ে যায়। সেই পশ্চিমবঙ্গবাসীকে বিদেশি, অনুপ্রবেশকারী বলে নানা সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।”
তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন জানিয়ে কংগ্রেস এই নেতা বলেন, “এর আগে আমি যখন সাংসদ ছিলাম, তখন বিষয়টা নিয়ে উত্তর প্রদেশে গিয়ে সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। আমি বলেছিলাম, আপনারা কেন বাংলার মানুষকে এভাবে অত্যাচার করছেন? এটা ভুল হচ্ছে আপনাদের। আমি গিয়েছিলাম মানুষের জন্য কথা বলতে। আর তৃণমূল তখন বলেছিল, আমি বিজেপিতে যোগদান করতে যাচ্ছি। এইভাবে বাংলার মানুষের জন্য করতে গেলেও বিপদ। আর যারা কিছু করবে না, তারা ভাষণ দিয়ে খালাস।”
রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে তাঁর বক্তব্য, “এই রাজ্যের কত পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্যগুলিতে রয়েছে, তার তালিকা রাজ্যের কাছে নেই। পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য রাজ্য সরকার কোনও সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি। আমি বলব, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটা দফতর থাকা দরকার। এই রাজ্যে রোজগার নেই, তাই লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিনরাজ্যে ও ভিনদেশে রয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের আয়ে তাঁদের সংসার চলে এখানে। ফলে রাজ্যের কোষাগারও ভরছে। অথচ, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই রাজ্য সরকারের।”
অনেকে বলছেন, ভিনরাজ্যে বাংলার মানুষকে হেনস্থার অভিযোগকে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে পারে তৃণমূল। অধীরও মেনে নিলেন, এই ইস্যুতে হাতিয়ার হতে পারে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের।