‘নীতিপুলিশির’ বর্বরতা! গরু চুরির অপরাধে ‘গুরু দণ্ডের’ নিদান গ্রামবাসীদের

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Jul 09, 2021 | 9:29 PM

Moral Policing: শুক্রবার, দেগঙ্গার চাঁদপুরের বাসিন্দা মহিবুল লস্কর অভিযোগ করেন মাঠের মধ্যে বেঁধে রাখা তাঁর তিনটে গরু তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

নীতিপুলিশির বর্বরতা! গরু চুরির অপরাধে গুরু দণ্ডের নিদান গ্রামবাসীদের
বাঁদিকে, জঙ্গিপুরের ছবি, ডানদিকে দেগঙ্গার ছবি, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা: ফের প্রকাশ্যে নীতিপুলিশির (Moral Policing) পাশবিক ছবি। সামান্য গরু চুরির অপরাধে রীতিমতো সালিশি সভা বসিয়ে অভিযুক্তদের গণপিটুনি দেওয়ার ছবি প্রকাশ্যে এল দুই জেলায়। শুক্রবার, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে  ও উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।

মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বালিঘাটায় গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে দুই যুবক। অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্বিচারে লাঠি-ঘুসি চালাতে থাকে গ্রামবাসীরা। মারের চোটে মাথায় বেশ খানিকটা চোট পায় এক অভিযুক্ত। বারবার কাকুতিমিনতি করা সত্ত্বেও চিঁড়ে ভেজেনি। স্থানীয় এক যুবকের কথায়, “ওরা গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তিনজন এসেছিল। একজন পালিয়ে গিয়েছে। দুজনকে ধরে হালকা মারধর করা হয়েছে।” কিন্তু, প্রকাশ্যে যে ছবি এসেছে তা ভয়ানক! ছবিতে দেখা গিয়েছে, গ্রামের মাঠে একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে। ঘিরে ধরে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। তারপর এক এক করে এসে মারধর করছেন। লাঠি-কিল-চড় বাদ নেই কিছুই! পরে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের কার্যত গ্রামবাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রায় একই ছবি উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। শুক্রবার, দেগঙ্গার চাঁদপুরের বাসিন্দা মহিবুল লস্কর অভিযোগ করেন মাঠের মধ্যে বেঁধে রাখা তাঁর তিনটে গরু তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। গ্রামের ছেলেদের খবর দিতেই তারা নানাভাবে  খোঁজ করতে শুরু করে। তারপরেই, হাড়োয়া রোডের উপরে গরু-সহ দুই অভিযুক্তকে আবিষ্কার করে তারা। সেখান থেকেই টেনেহিঁচড়ে ওই দুই অভিযুক্তকে নিয়ে আসা হয়। বৈদ্য়ুতিক খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাথি-ঘুসি-কিল-চড় মারতে থাকে উত্তেজিত জনতা। অভিযুক্তদের পেটেও লাথি মারতে বাকি রাখেননি গ্রামের ‘দাদারা’। পরে, পুলিশ এসে অভিযুক্তদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে।

সাম্প্রতিককালে, রাজ্যে পরপর এমন পাশবিক নীতিপুলিশির (Moral Policing) ছবি উঠে এসেছে। কখনও আদিবাসী যুবতীর উপর অত্যাচার, কখনও বা অমানবিক মারধর। প্রতিক্ষেত্রেই একরকম সালিশি সভা বসিয়ে শাস্তির নিদান দিয়েছেন গ্রামের ‘মাতব্বরা’। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ও আইনের কড়াকড়ি থাকা সত্ত্বেও কী করে বারবার নিজেদের হাতে আইন তুলে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ? এর সঙ্গে কি কেবলই নীতিপুলিশি (Moral Policing) জড়িয়ে নাকি আরও কোনও গভীর সামাজিক অবক্ষয়, প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।

আরও পড়ুন: ‘ও হিরো’! ‘ধর্ষকের’ তকমা গলায় ঝুলিয়ে গ্রামে ঘুরছেন পুরোহিত, ‘শাস্তি’ দিলেন গ্রামবাসীরা

Next Article