‘ও হিরো’! ‘ধর্ষকের’ তকমা গলায় ঝুলিয়ে গ্রামে ঘুরছেন পুরোহিত, ‘শাস্তি’ দিলেন গ্রামবাসীরা
Molestation Case: তবে, ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশি হস্তক্ষেপের জেরে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়রা। এমনকী, অভিযোগকারী পরিবারও এই ঘটনায় কোনও মন্তব্য করেনি।
পশ্চিম মেদিনীপুর: ফের মধ্য়যুগীয় বর্বরতার ছবি প্রকাশ্যে। নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি (Molestation) করার অভিযোগে এক পুরোহিতের গলায় টিন পরিয়ে হাতে প্ল্য়াকার্ড ধরিয়ে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম। সেই ঘটনার আবার ভিডিয়ো করে ভাইরাল করা হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দাঁতনের নারায়ণচক গ্রামে।
ভাইরাল ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, এক পুরোহিত গলায় পিচবোর্ডের প্ল্যাকার্ড আর টিনের কৌটো ঝুলিয়ে হাঁটছেন। প্ল্য়াকার্ডে লেখা রয়েছে, “শিশু ধর্ষণের অপরাধে আমি অপরাধী, তাই আমার এই শাস্তি”। সেই পুরোহিত হাঁটছেন আর পেছন থেকে কেউ সিটি দিচ্ছেন, কেউ হাসছেন, কেউ বা কটাক্ষ ছুড়ে বলছেন, ‘ও হিরো’! পিছনে পিছনে চলেছেন গ্রামবাসীরা। এই ভিডিয়োই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শোরগোল নেটপাড়ায়। গ্রামবাসীদের এ হেন মধ্য়যুগীয় ‘শাস্তি’ প্রদানের নিদান দেখে তদন্তে নামে পুলিশ।
নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে পুরোহিতের হাতে প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম। সেই ঘটনার আবার ভিডিয়ো করে ভাইরাল করা হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দাঁতনের নারায়ণচক গ্রামে।
সব খবর সবার আগে: https://t.co/WHPSwzYdl8#TV9Bangla | #Viral pic.twitter.com/3d1PjGH85s
— TV9 Bangla (@Tv9_Bangla) June 25, 2021
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার নারায়ণচকে একটি গ্রামের বাড়িতে শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে কাজ করতে আসেন ওই অভিযুক্ত পুরোহিত। ছিল খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও। নিগৃহীতা নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, ওইদিন দুপুরে তাঁর কন্যাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে ‘খারাপ’ আচরণ (Molestation) করেন। দেখতে পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় ওই পুরোহিতকে। ওইদিনই বিকেলে তাঁর গলায় প্ল্য়াকার্ড আর টিন ঝুলিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। প্ল্যাকার্ডে লেখানো হয়, ‘আমি শিশু ধর্ষণের অপরাধে অপরাধী, তাই আমার এই শাস্তি।’ সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তদন্তে নামে পুলিশ। নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ওই পুরোহিতকে পকসো আইনে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার, অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হয়।
তবে, ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশি হস্তক্ষেপের জেরে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়রা। এমনকী, অভিযোগকারী পরিবারও এই ঘটনায় কোনও মন্তব্য করেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রামবাসীদের এ হেন আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনায় প্রশাসনের তরফে কড়া পদক্ষেপ করতে হয়েছে। সম্প্রতি, একাধিক জেলায় এই ধরনের ‘নীতিপুলিশির’ ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তরবঙ্গে আদিবাসী মহিলাদের উপর এ হেন ‘শাস্তিপ্রদানের’ ছবি খুব পুরনো নয়। পরপর, এই ধরনের ঘটনা ঘটায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। যদিও, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আধিকারিক সূত্রে খবর, এখনও এমন কোনও অভিযোগ সামনে আসেনি। তবে, এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হবে। নিজের হাতে আইন যাতে তুলে না নেন গ্রামবাসীরা সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।
আরও পড়ুন: Malda Murder: আসিফের ‘কুকীর্তির’ খবর রাখতেন কাকা, তবুও চুপ কেন? তদন্তে গোয়েন্দারা