Murshidabad Unrest: ‘সেদিন যদি মেয়েদের নিয়ে না পালাতাম…’, কেঁদে ফেললেন কেষ্ট পালের স্ত্রী! গ্রামে পা পড়ল বিধায়কের
Murshidabad Unrest: বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন বছর খানেক আগে। মেজো মেয়ে এবং ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য ১০ ভরি সোনা এবং লক্ষ টাকার কাছাকাছি বাড়ির আলমারিতে রেখেছিলেন। সেই টাকা এবং সোনার গয়না কিছুই রাখেনি। সব লোড করে দিয়ে চলে গিয়েছে, চোখে জল নিয়ে বললেন ওই গৃহবধূ।

মুর্শিদাবাদ: চারপাশে তখন সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। একের পর এক বাড়ির অংশ ভাঙছে। নিজের দুই মেয়েকে নিয়ে কোনওরকমে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন দিগরি গ্রামের পাল দম্পতি। যখন বুঝতে পারলেন এই দুষ্কৃতীদের ঠেকানো সম্ভব নয়, তখন বাড়ির দরজার পিছনে দিয়ে বেরিয়ে উঁচু পাঁচিল টপকে কোনওভাবে পালিয়ে বেঁচেছেন ওই দম্পতি এবং তাঁদের দুই মেয়ে। দিগরি গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ দফতরের ইঞ্জিনিয়র কেষ্ট পালের স্ত্রী হাউ হাউ করে কাঁতদে কাঁদতে বললেন, “সেদিন যদি মেয়েদের নিয়ে না পালাতাম, হয় আমাদের মেয়েদেরকে তুলে নিয়ে চলে যেত অথবা ঘরের ভিতরে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিত। আমাদের কোনওভাবেই আস্ত রাখত না ওই দুষ্কৃতীরা। সবকিছু নিয়ে চলে গিয়েছে। বাড়ির ভিতরে কিছুই অবশিষ্ট নেই।”
বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন বছর খানেক আগে। মেজো মেয়ে এবং ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য ১০ ভরি সোনা এবং লক্ষ টাকার কাছাকাছি বাড়ির আলমারিতে রেখেছিলেন। সেই টাকা এবং সোনার গয়না কিছুই রাখেনি। সব লোড করে দিয়ে চলে গিয়েছে, চোখে জল নিয়ে বললেন ওই গৃহবধূ। বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, লোহার আলমারি ভাঙা। রান্নার ফ্রিজ থেকে গ্যাস ওভেন সবকিছুই ভেঙে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। বাড়ির ভিতর বিভিন্ন অংশ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের নিয়ে রীতিমতো প্রাণভিক্ষা করছেন ওই গৃহবধূ। বেঁচে থাকতে চান। তবে সেই বিভৎসতা ফিকে হলেও এখনও দগদগে ভয়াবহ স্মৃতি। তাই আর ওই এলাকায় থাকতে চান না অসহায় পাল দম্পতি।
গত শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তাণ্ডব চলেছে সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। জনপ্রতিনিধি হিসাবে তৃণমূল বিধায়ক কী উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ঘুরেছেন? নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে করা মন্তব্যের পর এই প্রশ্ন জোরাল হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেল সামশেরগঞ্জের অন্যতম প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দিগরি গ্রামে ভাঙচুর হাওয়া বাসিন্দাদের বাড়িতে ঘরে ঘরে ঢুকে দেখছেন এলাকার বিধায়ক। খানিক ক্ষোভের সঙ্গেই বলেন, “যেদিন থেকে ওইসব ঘটনা ঘটেছে সেদিন থেকে সাধারণ মানুষের এলাকায় আমি যাচ্ছি। কে কী অভিযোগ করছে তাতে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি না। মানুষ জানে আমি তাদের পাশে রয়েছি। আমি আমার বিধানসভা এলাকার যেইসব অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে প্রতিটি এলাকায় আমি ঘুরে ঘুরে দেখছি। তাই আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছে সেগুলি ভুল।”





