মুর্শিদাবাদ: পুলিশের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য, বদলির হুমকি দিয়ে মামলায় জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবির (Humayun Kabir)। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন সংশ্লিষ্ট থানার কর্তব্যরত ওসি রাজু মুখার্জি।
সোমবার ভরতপুর থানার ওসি রাজু মুখার্জির করা স্বতঃপ্রণোদিত এই মামলায় তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ও ডিএম ৫১ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করা হয়েছে। শাসক দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে পুলিশের এমন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের সাম্প্রতিক অতীতে কার্যত নজিরবিহীন বলে জানাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
কী বলেছিলেন হুমায়ুন?
দিন কয়েক আগে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে দলীয় কর্মীদের বার্তা দেওয়ার সময় মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবির হুঁশিয়ারি দেন আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। জানান, তাঁর টেবিলের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন। তখন তিনি বুঝবেন হুমায়ুন কবির কী। তার পর পুলিশ আধিকারিককে বদলিরও হুমকি দেন তিনি।
তৃণমূল বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, “আজ ওসিকে বলে যাব, আমি বিধায়ক। আমি এখানে শেষ কথা বলব। যতক্ষণ না রাজ্য নেতৃত্ব যে কোনও ক্ষেত্রে আমাকে আলাদা করে ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশ) না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যে সমস্ত লোক দলবিরোধী কাজ করেছে, যারা দলের প্রার্থীকে হারানোর চেষ্টা করতে যায়, তার জন্য কেন আমি আপস করতে যাব! তার জন্য ওসিকে বলেছি তোমাকে দালালি বন্ধ করতে বলছি…”
এর পর তাঁর হুঁশিয়ারি “যদি ওসি থাকার ইচ্ছা থাকে ভরতপুরে… তা না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তোমাকে বাধ্য করাব তল্পি গোটাতে”। এখানেই না থেমে প্রাক্তন মন্ত্রীর সংযুক্তি, “থানার সামনে বসব। টেবিলের উপর পা তুলে দাঁড়াব, বুঝবে হুমায়ুন কবির কী জিনিস। অটোমেটিক তুমি এখান থেকে ছেড়ে চলে যাও। বলবা, আমি বেশ ভাটপাড়ায় ছিলাম, সেখানেই চলে যাই। তো সেটা যেন বাধ্য করাতে না করে”।
এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। হুমায়ুনকে তীব্র কটাক্ষ করেন অধীর চৌধুরী। এবার যে পুলিশ অফিসারকে তিনি এমন হুমকি দিয়েছিলেন, তিনিই বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করলেন।
উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে প্রকাশ্য জনসভা থেকে দলেরই আরেক বিধায়কের বাপবাপান্ত করে, মারধরের হুমকি দিয়ে খবরে এসেছিলেন হুমায়ুন। তাঁর এহেন কাণ্ডে নড়েচড়ে বসে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ভরতপুরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবিরকে শো-কজও করা হয়। কিন্তু হুমায়ুন আছে হুমায়ুনেই। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এই কুমন্তব্যে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়।