
বহরমপুর: নেত্রীর সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন। মঞ্চে উঠবেন বলে পাশেই ছিলেন দাঁড়িয়ে। আর ঠিক তখনই কলকাতায় বসে সাংবাদিক বৈঠক করে মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম ও নিয়ামত শেখ হুমায়ুন কবীরের সাসপেনশনের নির্দেশ ঘোষণা করেন। মাঠে তখন দাঁড়িয়ে হুমায়ুন। সাংবাদিকদের মুখেই তিনি প্রথম জানতে পারেন, নিজের সাসপেনশনের কথা! প্রশ্ন করা হয়, সাসপেন্ড হওয়ার পরই কি তিনি নেত্রীর সভায় থাকবেন? হুমায়ুন বললেন, “কালই রিজাইন দেব, দলের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখব না। !” দৃশ্যত বিরক্ত ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সোজাসাপটা বললেন, “আমাকে জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ওনার সঙ্গে কথা বলব। যদি থাকতে বলেন থাকব, নাহলে বেরিয়ে যাব।”
কথা প্রসঙ্গেই উঠে ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য! হুমায়ুনের বাবরি মসজিদ ইস্যুতে ফিরহাদ বুধবারই স্পষ্ট করেছিলেন, দল এই ধরনের মন্তব্য বা পদক্ষেপকে সমর্থন করে না। বৃহস্পতিবার যখন একদিকে হুমায়ুন পৌঁছে গিয়েছেন নেত্রীর কর্মসূচিতে, তখন ফিরহাদ সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, দল হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে। এ প্রসঙ্গে হুমায়ুন বলেন, “ববিদার কোনও কথার আমি জবাব দেব না।” উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৫ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিনা নোটিসে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন। সে কথা নিজেই বলেন হুমায়ুন। আর তারপরই বিস্ফোরক।
দল থেকে নিজেই ইস্তফা দেবেন হুমায়ুন আর সেটা শুক্রবারই। হুমায়ুন বলেন, ” কালকেই রিজাইন দিয়ে দেব।” বলতে বলতেই মাঠের বাইরের দিকে সোজা হাঁটা লাগালেন হুমায়ুনয। ২২ ডিসেম্বরে বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ে নতুন দলের সূচনা করবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি বললেন, ” ২২ তারিখ মুর্শিদাবাদের নিজের দলে ওপেনিং করব। মাঠি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। ১৩৫ সিটে লড়ব।” ”
পরে TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকে হুমায়ুন বলেন, “আমি এই সাসপেনশনকে স্বাগত জানাচ্ছি। দলের কোনও সাংগঠনিক পদে হুমায়ুন কবীর ছিল না। এখনই নেই। কাজেই তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হওয়াটা আমার কাছে গুরুত্বহীন। আমার কাছে আকস্মিক আঘাত আসারও বিষয় নয়।”
তৃণমূলকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, “এর যোগ্য জবাব তৃণমূল রাজ্য থেকে ক্ষমতাচ্যুত করে এর খেসারত দেবে। আমি একজন মুসলিম। বাবরি মসজিদ করার জন্য আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাতে আমার জীবন চলে গেলে যাবে। আমি শহিদ হলে হব। কিন্তু আমি পিছু হটব না। ৬ তারিখে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস হবেই।”