নদিয়া : বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের (Jagannath Sarkar) গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা। শনিবার বিকেলে বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত দ্য কাশ্মীর ফাইলস সিনেমা দেখতে কল্যাণী গিয়েছিলেন বিজেপি (Bharatiya Janata Party) সাংসদ। সঙ্গে দলীয় কর্মী ও সমর্থকরাও ছিলেন। ফেরার পথে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, সেই সময় হরিণঘাটা ৭ নম্বর শিমুলতলা এলাকায় হঠাৎ তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে ছুটে আসে একটি বোমা। বোমাটি গাড়ির পিছনে গিয়ে লাগে বলে অভিযোগ। ঘটনায় বীভৎস আওয়াজ এবং আলো হয়ে যায় গোটা এলাকা। সাংসদের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সাংসদ নিজে অক্ষত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সাংসদ নিজে হরিণঘাটা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। তবে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
জানা গিয়েছে, নিরাপত্তারক্ষী বিহীন থাকার কারণে, সেই সময় সাংসদ জগন্নাথ সরকারের গাড়িতে কয়েকজন দলীয় কর্মী ছিলেন। বেশ খানিকটা দূরত্বে গাড়ির থামিয়ে দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা হামলাকারীদের খোঁজ শুরু করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারা দুষ্কৃতীদের খুঁজে পাননি। এদিকে, পথ চলতি মানুষরা এবং ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসেন সাংসদের গাড়িতে বোমা মারার শব্দ পেয়ে। সাংসদ জগন্নাথ সরকার নিজে অক্ষত থাকলেও হামলায় তাঁর গাড়ির পিছনের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়ির পিছন দিকের কিছুটা অংশ তুবড়ে গিয়েছে। তবে স্বস্তির বিষয় এই যে সাংসদ বা তাঁর দলীয় কর্মীদের কেউই চোট পাননি। তবে বোমাটি যদি একটু এদিক ওদিক হত, তাহলে বড়সড় অঘটন ঘটার আশঙ্কা ছিল। রাণাঘাটের সাংসদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বোমাটি সময়ের তারতম্যের জন্য গাড়ির কাঁচ ভেদ করে গাড়ির ভেতরে চলে আসলে সকলেরই মৃত্যু ঘটতে পারত।
ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন, “শিমুলতলা যখন পার করছি, তখনই একটি বিকট শব্দ হল এবং আলো হয়ে গেল। দেখি আশেপাশের লোকেরা বেরিয়ে আসছে। তারপর সবাই বলল, বোম মারা হয়েছে, বোম মারা হয়েছে। পরে আমি গাড়ির পিছনে গিয়ে দেখলাম, সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়ি লক্ষ্য করেই মারা হয়েছে, তা নিশ্চিত।”
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “রাজ্যের আইন -শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত জঘন্যতম জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশ মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন, তাঁর অপদার্থতা ও অকর্মণ্যতা বার বার প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। একজন সাংসদের উপরে যদি এভাবে হামলা হয়, শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় শুটআউট পর্যন্ত হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বলে আর কিছু নেই। পুরোটাই মগের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। যে যার মতো করছে, প্রশাসন নির্বিকার চিত্তে দাঁড়িয়ে আছে। প্রশাসনের কোনও ভূমিকা নেই। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
এদিকে রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদের উপর হামলার প্রতিবাদে রানাঘাটে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। রাণাঘাটের বিজেপি সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলছে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হোক। তবে ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা কারা করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন : Asansol Bi-Election : অগ্নিমিত্রাকে জেতাতে পোড় খাওয়া জিতেন্দ্রর মগজাস্ত্রেই ভরসা পদ্ম নেতাদের