নদিয়া: বাড়ির বউ প্রত্যেকদিনই প্রাতঃভ্রমণে বের হন। বুধবারও বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে ভরা রাস্তাতে যে এমনটা ঘটতে পারে, তা একবারও আঁচ করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। প্রাতঃভ্রমণে একা বেরিয়েছিলেন মহিলা। পথেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতী। কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায় গুলি। পথেই মৃত্যু হয় মহিলার। তবে ক্ষত তৈরি হয়। তার জেরেই রক্তক্ষরণ, অতঃপর মৃত্যু। নবদ্বীপের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সাতসকালেই এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। নিহত মহিলার নাম রানু বৈরাগ্য (৪৫)। কী কারণে গুলি তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ধরনের ঘটনায় রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে আরও সুর জোরাল করল বিরোধীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানু বৈরাগ্য ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি প্রত্যেকদিনই প্রাতঃভ্রমণে বের হন। বুধবার সকালে হেঁটে নবদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, তখনই এক দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আকস্মিক এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। আকস্মিকতার ঘোর কাটিয়ে ওঠার আগেই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারাই রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে উদ্ধার করে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রানু পরিচারিকার কাজ করতেন। বছর দুয়েক আগে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কে গুলি করল, সেটাই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আদৌ এর পিছনে কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন কাজ করছে কিনা, সেটাও বিচার্য। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনায় রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ফের প্রশ্নের মুখে। বিরোধীরাও এই নিয়ে সরব। বিজেপি বিধায়ক জগন্নাথ সরকার বলেন, “এক মাসের মধ্যে দেখলে দেখা যাবে, দিনে ১০ টা করে খুন। আসলে মুখ্যমন্ত্রী ক্রিমিন্যালদের দলে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদেরকে ব্যবহার করতে গিয়েছিলেন। এটা তারই ফল। ধর্ষক উৎসাহিত হচ্ছে, তার কোনও শাস্তি হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। এটা ঠিক নয়। নাবালিকা ধর্ষণ সম্পর্কে যা বলছেন, সেটা কীভাবে মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারেন? তিনি তো পুলিশমন্ত্রীও।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রথম রঞ্জন বলেন, “কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। দোষীরা শাস্তি পাক, এটাই চাইব। মুখ্যমন্ত্রী তো বলে দিয়েছেন, বেআইনি অস্ত্র সব খুঁজে বার করতে হবে। অভিযান তো চলছে।”
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “সকালে মর্নিংওয়াকে গিয়েছিলেন। ওখানেই গুলি করা হয়েছে। রোজই হাঁটতে যেতেন। কিছু ধরে একটা বাড়িতে রান্নার কাজ করত।”
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণ’ শব্দটা বদলে ‘অত্যাচার’ লিখতে বাধ্য করা হয়েছে, মারাত্মক অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে