নদিয়া: মাঠে দশ বছরের মেয়েকে সাইকেল চালানো শেখাচ্ছিলেন বাবা। বড় মাঠ। সেই মাঠে গাড়ি চালানো শিখছিলেন আরও এক ব্যক্তি। অনেকেই সেই মাঠে গাড়ি চালানো শেখেন। কিন্তু বাবা-মেয়ে বুঝতে পারেননি, দূর থেকে যে গাড়িটা আসছিল, তার চালক আসলে শিক্ষানবীশ। কাঁচা হাতে সাইকেল চালাচ্ছিল বাচ্চা মেয়েটা। উল্টোদিক থেকে থেকে গাড়িটা ডান দিক-বাঁ দিক করতে করতে এসে সজোরে মুখোমুখি ধাক্কা। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ। গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে গিয়েছে দশ বছরের বাচ্চা মেয়ে। আর মেয়েকে বাঁচাতে দিয়ে পিষ্ট হয়ে যান বাবাও। মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হাঁসখালির বেদনা এলাকায়। নিহত বাবা-মেয়ের নাম কৃষ্ণ সাহা ও পিউ সাহা।
বছর দশেকের পিউ চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। ইদানীং তার সাইকেল চালানো শেখার ইচ্ছা হয়েছিল। বাবা একটা সাইকেলও কিনে আনেন তার জন্য। পাড়ার মাঠেই মেয়েকে সাইকেল চালানো শেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ওই মাঠে আবার অনেকে বাইক, গাড়ি চালানোও শেখেন। সেরকম একটি গাড়ি মাঠের চারদিক থেকে ঘুরছিল। মাঠের এক পাশ দিয়ে সাইকেল চালাচ্ছিল পিউ। বাবা পিছনেই ছিলেন। কিছুটা হাত রপ্ত হওয়ায় মেয়েকে একাই ছেড়েছিলেন বাবা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, পিউ তার নির্দিষ্ট রুট দিয়েই যাচ্ছিল। আচমকাই উল্টো দিক থেকে গাড়িটা এপাশ-ওপাশ করে ধাক্কা মারে তাকে। পিছন থেকে দৌড়ে আসেন বাবাও। দুজনই গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে যান। স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় কৃষ্ণনগর জেলা শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথম পিউ সাহাকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন, তার কিছুক্ষণ পর বাবা কৃষ্ণ সাহাকেও চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নেমে এসেছে এলাকায় শোকের ছায়া।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “পাড়ার মধ্যেই এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে, ভাবা যাচ্ছে না। চোখের সামনে মেয়েটা বড় হচ্ছিল। এই তো সেদিন সাইকেল কিনে আনল কৃষ্ণ দা। বলল মেয়েকে শেখাবেন। কী থেকে যে কী হল!” ওই গাড়িচালকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Ek Janala Project: বহুতল আবাসন নির্মাণে অনুমতি পেতে এবার নয়া নিয়ম! চালু ‘এক জানালা’ ব্যবস্থাপনা
আরও পড়ুন: Madhyamik 2022: বড় খবর! মাধ্যমিকের তৃতীয় দিনেই হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা, কোন পথে রাজ্য?