নদিয়া: আট বছরের শিশুকে অপহরণ করে খুনের মামলায় ২মহিলা-সহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রানাঘাট মহকুমা আদালত।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
ঘটনাটি ২০১৪ সালে। গত অগাস্টের ৪ তারিখ নদিয়ার হাঁসখালি থানার গাড়াপোতা বাসিন্দা মিলন বিশ্বাসের কাছে ফোন যায় তাঁর আট বছরের সন্তান রজত বিশ্বাসকে অপহরণ হয়েছে। তাঁর মুক্তিপণ চাওয়া হয় ১০ লক্ষ টাকা। হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বাবা মিলন বিশ্বাস।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন শিশুটি বাড়ির সামনেই খেলছিল। সেই সময় মোবাইলে গেম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করা হয় তাকে। তারপর শিশুটির বাবাকে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু শিশুটির বাবা থানার দ্বারস্থ হওয়ায় ভয় পেয়ে যায় অভিযুক্তরা। প্রমাণ লোপাটের জন্য তার দিয়ে গলায় ফাঁস লাদিয়ে শিশুটিকে নৃশংসভাবে খুন করে। এরপর শিশুটিকে স্থানীয় এক পাট বাগানে ফেলে দেয়। দু’দিন বাদে শিশুর পচা গলা দেহ উদ্ধার হয়।
মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নেমে ২ মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নবদ্বীপের বাসিন্দা বছর কুড়ির চৈতালি পাল, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা বছর একুশের মনিকা বাগচী, মায়াপুর বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের সঞ্জয় দাস ও স্থানীয় বাসিন্দা হরিদাস বিশ্বাস।
গত কয়েক বছর ধরে রানাঘাট আদালতে এই বিচারপ্রক্রিয়া চলে। মঙ্গলবার আদালত এই চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা ঘোষণা করে।
সাজা ঘোষণার পর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি রজতের মা চিত্রা বিশ্বাস। আদালতের সামনে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ” সেটা ১৪ সাল। ৪.৮ তারিখে আমার ছেলে বিকাল ৪ থেকে সাড়ে চারটের মধ্যে মিসিং হয়ে যায়। অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি। আমার ভাসুরের কাছে ফোন আসে। ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমরা টাকা দিতে পারিনি। দুদিন পর পাট ক্ষেতের মধ্যে ওকে পচাগলা অবস্থায় পাওয়া যায়। আমার ছেলেটা অত্যন্ত নৃশংসভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে। আর যেন কোনও মায়ের কোল খালি না হয়।”
তবে এখনও পর্যন্ত নিজেদেরকে নির্দোষ বলেই দাবি করে চলেছেন সাজাপ্রাপ্তরা। বছর চৈতালি পালের সোজাসাপটা বক্তব্য, “সবাই জানে আমরা কিছুই করিনি। আমাদেরকে বেকার ফাঁসানো হয়েছে। এটা সবাই জানে। আমাদের কিছু বলার নেই।”
আরও পড়ুন: Khoyrashole Coal Scam: উত্তেজনার মাঝেই আবারও খয়রাশোলের অবৈধ কয়লার ঘাঁটিতে অভিযান পুলিশের, ধৃত ২