নদিয়া: মাকে টার্গেটটা অনেক দিন ধরেই করেছিলেন ছেলে। কিন্তু সেভাবে নাগালে পাচ্ছিলেন না। সোমবার সকালে আবারও বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে মাকে একা পেয়েছিলেন। তখনই ফের সেই একই প্রস্তাব। বাড়ি-জমি-জায়গা সবই লিখে দিতে হবে তাঁর নামে। কিন্তু বাপ-মরা মেয়ে দুটোর ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছেলেকেই সব দিয়ে দিতে চাননি মা! আর তাতেই পাথর দিয়ে মায়ের মাথা থেঁতলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুরের বাথানগাছি পাবানপাড়া এলাকায়।
পাবানপাড়ার বাসিন্দা দীপালি ঘোষের স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বছর খানেক আগে। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। কোনওমতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান দীপালি। তাঁর একমাত্র ছেলে সুকেশ ১৮ বছর বয়স হতেই বিয়ে করেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র থাকতে শুরু করেন। দীপালি ঘোষের অভিযোগ, তাঁর স্বামীর তিন বিঘা চাষের জমিতে বাড়ি করে থাকেন ছেলে। আর চাষবাস করেন।
দীপালির বক্তব্য, ছেলে দাবি করছেন ওই সম্পত্তি এবং মা দীপালি ঘোষ যে বাড়িতে থাকেন, দুটোই তাঁর নামে লিখে দিতে হবে। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই মায়ের সঙ্গে ঝামেলা করতেন তিনি। সোমবার সকালেও ফের বাড়িতে এসে একই বিষয়ে মায়ের ওপর চাপ তৈরি করতে থাকেন ছেলে। সে সময় মা বকাবকি করে ছেলে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। এরপর বাড়ির সামনের রাস্তাতেই মাকে একা পেয়ে ছেলে পাথর ছুড়ে মারে বলে অভিযোগ।
মেয়ে দেখতে পেয়ে মাকে বাঁচাতে আসেন। তখন বোনকেও অভিযুক্ত মারধর করেন বলে অভিযোগ। দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এবার বিচারের আশায় শেষমেশ ছেলের বিরুদ্ধে থানার দ্বারস্থ হন দীপালি। শান্তিপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপুর থানায় যান। ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
দীপালি বলেন, “ছেলে-মেয়েগুলোকে কষ্ট করে বড় করেছি। সবই যদি ছেলেকেই দিয়ে দিই, তবে মেয়ে দুটোর কী হবে! বারবার বুঝিয়েছি ওকে। তবে ও আজ যা করল, ভাবতেই পারিনি কখনও।” এক প্রতিবেশী বললেন, “ছেলেটা এরকমই। নাহলে মায়ের সঙ্গে কেউ এমন করতে পারে। থাকে তো বাবার জায়গাতেই। তাও সব চাই।”