নদিয়া: হাঁসখালিকাণ্ডে (Hanskhali) গ্রেফতার মূল অভিযুক্তের বাবা। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তিনি। শুক্রবারই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI)। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যের ডান হাত হিসাবে পরিচিত একজনকে। এদিন সন্ধ্যায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। হাঁসখালিকাণ্ডের তদন্তে নদিয়ায় সিবিআই যে অস্থায়ী ক্যাম্প করেছিল, সেই ক্যাম্পেই এদিন দু’জনকে ডাকা হয়। এর আগেও বেশ কয়েক দফায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এদিন জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বেশ কিছু নতুন তথ্য উঠে আসে তদন্তকারীদের হাতে। যার ভিত্তিতেই এদিন গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, এদিন জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন তাঁদের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। এরপরই গ্রেফতারি।
কিন্তু কেন এই দু’জনকে গ্রেফতার করা হল? সিবিআই সূত্রে খবর, তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কীভাবে নির্যাতনের পর মৃত ওই নাবালিকার দেহ তড়িঘড়ি দাহ করা যায়, কোনও নথি ছাড়া শেষকৃত্য করা যায় সেই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন অভিযুক্তের বাবা তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত স্তরের নেতা ও তাঁর এক সঙ্গী। শুধুমাত্র অপরাধই মূল অভিযোগ নয়, এই ঘটনায় অনুঘটক রয়েছে আরও বহু কিছু। সেইসবে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে। ওই পঞ্চায়েত সদস্য প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় শ্মশানে দেহ দাহ করার ব্যবস্থা করে বলে অভিযোগ। পরে সকলের মুখ বন্ধ করার জন্য যা যা করার তাও এই পঞ্চায়েত সদস্যই করেছিল বলে অভিযোগ।
যদিও হাঁসখালিকাণ্ডের পরই স্থানীয় তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, এই নেতার সঙ্গে তারা সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করছে। দলের যোগাযোগ না থাকলেও এখনও তিনি পঞ্চায়েত সদস্য এবং তা তৃণমূলের টিকিটে জেতা সদস্য হিসাবেই। শনিবার সিবিআই ধৃতদের নিজের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করবে। আরও কেউ এই ঘটনায় যুক্ত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। এই নিয়ে মোট ৬ জন গ্রেফতার হল হাঁসখালির ঘটনায়।
গত ৫ এপ্রিলের ঘটনা। এলাকার এক বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল এক নাবালিকা। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। রাতেই মৃত্যু হয় তার। ভোরের আলো ফোটার আগেই তাকে দাহ করা হয়। মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়াই ওই নাবালিকাকে দাহ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর জানা যায়, ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই পাশবিক নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে মারা যায় সে। তদন্তে উঠে আসে, স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর ছেলে ও তার বন্ধুদের নাম। তৃণমূল নেতার ছেলের জন্মদিনেই গিয়েছিল নাবালিকা। গত ১২ এপ্রিল এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।