নদিয়া: অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুড়বাড়ি যাচ্ছিলেন যুবক। এরই মধ্যে ট্রেনের মধ্যেই ওঠে স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা। ব্যাথায় ছটফট করতে থাকেন মহিলা। কী করবেন ভেবে কুল কিনারা করতে পারছিলেন না ওই যুবক। কিন্তু মানবিক মুখ দেখা গেল সহযাত্রীদের। তাঁদের সহযোগিতায় সুস্থ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রসূতি। ফুলিয়া স্টেশন ছাড়ার পরই ঘটনাটি ঘটে।
সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার হালি শহরের বাসিন্দা সমীরণ ভৌমিক। পেশায় রেলের ঠিকা কর্মী তিনি। সমীরণের স্ত্রী পায়েল ভৌমিক। গতকাল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে নদিয়ার শান্তিপুরে শ্বশুড়বাড়িতে যাচ্ছিলেন সমীরণ। কিন্তু ফুলিয়া স্টেশন ছাড়ার পরই ওঠে স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা। সেই সময় কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না সমীরণ। তখনই সাহায্যে এগিয়ে আসেন ওই কামরায় থাকা মহিলা যাত্রীরা। চলন্ত ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে ভিতরেই সন্তান প্রসব করলেন পায়েল। সুস্থ এক কন্যা সন্তানের জন্মদিলেন তিনি। পরে শান্তিপুর স্টেশনে ট্রেন ঢুকলে রেল পুলিশের সহযোগিতায় মা ও সন্তানকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে মা ও কন্যা সন্তান দুই জনেই সুস্থ্ আছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে বারুইপুর থেকে একই ঘটনা সামনে আসে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মাধবপুরের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিনি তার গর্ভবতী স্ত্রী পূজা মন্ডল কে নিয়ে আপ লক্ষীকান্তপুর ট্রেনে উঠেছিলেন। তাঁকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী সুভাষ মণ্ডল।
এমনিতেই কোভিড পরিস্থিতিতে চারপাশে আতঙ্ক আর উদ্বেগের ছবি। এরই মধ্যে অসুস্থ বোধ করছিলেন পূজা মণ্ডল। কিন্তু ট্রেনের মধ্যেই বাধে বিপত্তি। প্রচন্ড প্রসব যন্ত্রণায় ছটপট করছিলেন ওই মহিলা রেল যাত্রী। পাশে থাকা রেল যাত্রীরা খবর দেন বারুইপুর জিআরপিতে। সঙ্গে সঙ্গেই বারুইপুর জিআরপির ওসি অর্ণব দত্তের উদ্যোগে মহিলা পুলিশকর্মীরা পৌঁছে যান ওই কম্পার্টমেন্টে।
অন্য দিকে স্টেশন মাস্টারকে খবর দেওয়া হয় ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য। তারপরে প্রসব যন্ত্রণায় ছটকানো ওই মহিলা রেল যাত্রীকে স্ট্রেচারে করে নামানো হয় প্লাটফর্মে। সেখানেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সদ্যজাত পুত্র সন্তান ও তাঁর মাকে স্ট্রেচারে করে পাঠানো হয় বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই লেবার রুমে চিকিৎসা চলছে মা ও সদ্যজাত পুত্রসন্তানের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা ও সন্তান দু’জনেই সুস্থ আছেন। কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁদের জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হবে। স্বামী সুভাষ মণ্ডল জানিয়েছেন, সন্তানের জন্মের মাস খানেক বাকি ছিল। তার আগেই এ ভাবে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বারুইপুর স্টেশন।
আরও পড়ুন: Bhawanipore By-Election: পাকড়াও ‘ভুয়ো ভোটার’, ধুন্ধুমার ভবানীপুরের খালসা হাইস্কুলে