AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বভারতী অবিচ্ছিন্ন ভারতের ঐতিহ্য, মোদীর ভাষণে বারবার উঠে এল সে কথাই

এই মহামারী আমাদের এটাই বোঝাল ভোকাল ফর লোকাল। পৌষমেলার সঙ্গে এই মন্ত্র প্রথম থেকেই জুড়ে রয়েছে। শতবর্ষ উদযাপন ভাষণে বললেন মোদী।

রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বভারতী অবিচ্ছিন্ন ভারতের ঐতিহ্য, মোদীর ভাষণে বারবার উঠে এল সে কথাই
ফাইল চিত্র।
| Updated on: Dec 24, 2020 | 2:32 PM
Share

নয়া দিল্লি: কোনও অঞ্চল, রাজ্যের সীমানায় রবীন্দ্রনাথ বা বিশ্বভারতী (Visva Bharati)কে গণ্ডীবদ্ধ করে রাখা যায় না। গোটা দেশ এই নামের গর্বে গর্বিত। ভারতের ঐতিহ্যর সঙ্গে মিলেমিশে একাত্ম হয়ে রয়েছেন গুরুদেব ও তাঁর সাধের এই আশ্রম। বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সে কথাই বারবার বুঝিয়ে দিলেন আচার্য নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বক্তব্যে কোথাও রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন তাঁর জন্মভূমি গুজরাটকে, কখনও তাঁর ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রে মিলে গেল রবি ঠাকুরের পৌষমেলার উদ্দেশ্য। শুধু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই নন, বাংলার শ্রী রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকি, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-এই প্রত্যেক বাঙালির অবদান দেশের জন্য একইভাবে অনস্বীকার্য, শোনা গেল মোদীর মুখে।

বৃহস্পতিবার ৮ পৌষ ১০০ বছরে পদার্পণ করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেন আচার্য নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই তিনি বলেন, বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তনের বহিঃপ্রকাশ। এই প্রতিষ্ঠানই দেশকে আলাদা শক্তি জুগিয়েছে। “হে বিধাতা দাও দাও মোদের গৌরব দাও। গুরুদেব কখনও ছাত্রদের কথা ভেবে এ কথা বলেছিলেন। আজ সারা দেশ এই কথা বলে।” ‘নতুন ভারত’ নির্মাণের জন্য বিশ্বভারতীর নিত্য নতুন প্রয়াস রয়েছে বলেও নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন মোদী। বলেন, “আজ বিশ্বভারতীর গৌরবময় শতবর্ষে আমার মতো গোটা দেশ গর্বিত।”

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানায়নি বিশ্বভারতী, দাবি মমতার মন্ত্রীর

এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, গুজরাটের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয়তা বহু পুরনো। “আমি বারবার এই প্রসঙ্গ তুলি, কারণ অভিন্ন ভারতের আদর্শের এ এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ভাষা, এলাকার বিভিন্নতা থাকলেও আমাদের দেশ একে অপরের সঙ্গে কতটা একাত্ম তা এখানে স্পষ্ট। বিবিধতায় ভরা এ দেশ যে আসলে এক, এই সম্পর্কগুলি সে বার্তাই দেয়। একে অপরের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখি।” এ প্রসঙ্গে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, “গুরুদেবের দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গুজরাটের আমেদাবাদে ছিলেন। জ্ঞানদানন্দিনী দেবী যেদিন আমেদাবাদে আসেন তখন দেখেন মহিলারা ডানদিকে শাড়ির আঁচল নেন। কিন্তু তাতে কাজে সমস্যা হয়। উনি ভেবে দেখলেন আঁচল বাঁ দিকে হলে আর সমস্যা হয় না। আমি ঠিক জানি না শুনেছি , বাঁ কাঁধে শাড়ির আঁচল রাখার ধারনা উনিই চালু করেন। একে অপরের সঙ্গে থেকে আমরা একে অপরে সংস্কার, ঐতিহ্য থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। এই সংস্কারই গুরুদেব বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন।”

একইসঙ্গে বিশ্বভারতীর প্রসঙ্গে তুলে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “এ বছর এখানে পৌষমেলা করা সম্ভব হল না। ১০০ বছরের ঐতিহ্যে তৃতীয়বার এমনটা হল। এই মহামারী আমাদের এটাই বোঝাল ভোকাল ফর লোকাল। পৌষমেলার সঙ্গে এই মন্ত্র প্রথম থেকেই জুড়ে রয়েছে। মহামারীর জন্য এই মেলায় যে হস্তশিল্পী আসতেন, এ বছর তা পারেননি। আমরা যখন আত্মসম্মান, আত্মনির্ভরতার কথা বলছি তখন আমি আপনাদের সাহায্য চাই। বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা পৌষমেলায় যে সমস্ত শিল্পীরা আসতেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁদের উৎপাদন নিয়ে জানুন। এই গরীব শিল্পীদের শিল্পকর্ম অনলাইন কীভাবে বিক্রি করা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা কতটা কাজে লাগানো যায় এটা দেখুন। এভাবেই দেশ আত্মনির্ভর হবে। গুরুদেবের স্বপ্ন পূরণ হবে।” অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের স্বপ্ন পূরণের পথ কোথাও যেন মিলে গেল মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়া গঠনের স্বপ্নের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: ভোকাল ফর লোকালের প্রকৃষ্ট উদাহরণ পৌষমেলা, বিশ্বভারতীর শতবর্ষে বললেন মোদী

শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ থেকে ক্ষুদিরাম বসু, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের কথা তুলে মোদী বলেন, “এমন আরও অনেকে আছেন, তাঁরাই আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁদের দেখানো পথেই আমাদের নতুন ভারত গড়তে হবে। দেশের জন্য, দশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।” কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতিও বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রনাথের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বলেও এদিন দাবি করেন নরেন্দ্র মোদী। বলেন “গুরুদেব মনে করতেন আমাদের শিক্ষা বেঁধে রাখা উচিত নয়। চিত্ত যেথা ভয়শূন্য , উচ্চ যেথা শির…। অর্থাৎ আমরা এমন ব্যবস্থার প্রচলন করি যাতে আমরা মুক্ত হতে পারি। মাথা তুলে চলতে পারি। মনকে ভয় মুক্ত করতে পারি। আজ জাতীয় শিক্ষানীতি এরই ধারক। বিশ্বভারতীর এই নীতি প্রয়োগে অনেক বড় ভূমিকা আছে।”